নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে উপস্থিত থাকার বিরল রেকর্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
চন্দ্রজা গুহ। ভারতের দমদমের একটি বেসরকারি কনভেন্ট স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। রেগুলারিটির এমন নজির এই স্কুলে কেন অন্য কোথাও নেই। স্কুলের ‘সুপার-গার্ল’ বলে খ্যাত এই মেয়েটিকে এক ডাকে চেনেন স্কুলটির দারোয়ান থেকে কর্তৃপক্ষ সকলেই।সবারই এক কথা, বিগত ১৪ বছর স্কুলে এসেছেন কিন্তু চন্দ্রজা-কে দেখেননি এমনটা হয়নি একদিনও। ৪ বছর বয়সে এই স্কুলে নার্সারিতে ভর্তি হয়েছিল ছোট্ট মেয়েটা, স্কুলের অ্যাটেন্ডেন্স রেকর্ড অনুযায়ী নার্সারিতে ভর্তি হওয়ার প্রথম বছরেই ১০০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল চন্দ্রজার। তারপর শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বারোমাস কোনদিন তার স্কুল বন্ধ নেই।এখন দাদ্বশ শ্রেণির ছাত্রী, ১৮ বছরের কিশোরী। মাঝের ১৪টা বছরে প্রতি দিন প্রতিটি ক্লাসেই উপস্থিতি রয়েছে তার। আর এতেই সে গড়ে ফেলেছে নতুন এক রেকর্ড। স্কুলের তরফে জেলাশাসকের মাধ্যমে সংবর্ধিত করা হয়ছে তাকে। চলছে গিনেস বুকে তার নাম তোলার চেষ্টা।শুনতে সোজা হলেও চন্দ্রজার এই জার্নি খুব সবজ ছিল না। দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নিচু এলাকায় বাড়ি হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই এক হাঁটু জল জমে যায় তার বাড়ির সামনে। প্রতি বছর হাঁটু সমান জল পেরিয়েই প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে স্কুলে পৌঁছছে সে। অসুস্থতা, আত্মীয়স্বজনের বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠান সব চন্দ্রজার কাছে সেকেন্ড প্রায়োরিটি পেয়েছে। প্রথমটা অবশ্যই স্কুলে যাওয়া।একাধিক বার প্রচণ্ড জ্বরের মধ্যেও স্কুলে গিয়েছে। হঠাৎ কোনও কারণে স্কুল ছুটি হয়ে গেলে কারও মুখে শুনে নয়, স্কুলের গেটে পৌঁছে স্কুল বন্ধ দেখে তবেই বাড়ি ফিরেছে। এমন পাগলামির জন্য কম টিপ্পনি শুনতে হয়নি। কিন্তু সেসব সহ্য করে নিজের অভ্যাসে অটল থেকেছে।নার্সারিতে একশো শতাংশ উপস্থিতির জন্য পুরস্কৃত হয় চন্দ্রজা। এর পরে ওই পুরস্কার পাওয়াটা নেশায় পৌঁছে যায়। আর সেই নেশাই রেকর্ড গড়ে দিয়েছে। পারবারিকভাবে চলছে গিনেস বুকে নাম তোলার চেষ্টা।