দ্বিতীয় ‘রানা প্লাজা’ হওয়ার সম্ভাবনা নেই: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:: নতুন করে ‘রানা প্লাজা ধসের’ মতো কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। এর কারণ হিসেবে সরকার পোশাক খাতের নিরাপত্তায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ায়কেই তিনি উল্লেখ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ২০১৪ সালে বিভিন্ন কারখানার পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রকাশ করে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গার্মেন্ট খাতকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। গত দুই বছরে বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে দ্বিতীয় রানা প্লাজা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স ছাড়াও সব পোশাক কারখানায় মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পরিদর্শন করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে সেখানকার পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন, যা বিশ্বে ভবন ধসে সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা।
এর পর দেশের কারখানাগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে গঠিত হয় ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট ‘অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ’ ও আমেরিকার ক্রেতাদের জোট ‘বাংলাদেশ সেফটি অ্যালায়েন্স’ গঠন করা হয়, যা অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত।
রানা প্লাজা ধসের পর দুটি জোটের পক্ষ থেকে দেশের দুই হাজার কারাখানা পরিদর্শন করা হয়, বাকী কারখানাগুলো সরকারের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পরিদর্শন করা হয়েছে বলে জানান চুন্নু।
সংবাদ সম্মেলনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহম্মদ জানান, ২০১৪ সালে বিভিন্ন ধরনের ২৪ হাজার ১৯৭টি কারখানা পরিদর্শন করা হয়েছে। এই সময়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের ৪৪ হাজার ৩৪৭টি ঘটনা পাওয়া গেছে।
২০১৪ সালে শুধুমাত্র পোশাক কারাখানায় ১৫১টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ১১ হাজার ১৮১ জন আহত হয়েছে।
সৈয়দ আহম্মদ জানান, সব ধরনের কারখানা মিলিয়ে ২০১৪ সালে এক হাজার ২৬৯টি দুর্ঘটনায় ৮৮ জন মারা গেছেন, আর আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৩৩৭ জন।
পরিদর্শন শেষে ৩৭টি পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩৬টি কারখানা আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পরিদর্শন শেষে বেশকিছু কারখানা সংস্কার করতে মালিকদের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা ধসের আগে কারখানা পরিদর্শন বিভাগ নিস্ক্রিয় ছিল। এই বিভাগে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
শ্রম সচিব মিকাইল শিপার ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।