১১ জনের ওপর রাজশাহীর মাদক নিয়ন্ত্রণের ভার
নিউজ ডেস্ক ::
এগারো ব্যক্তির ওপর নির্ভর করছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ। বিভাগীয় মাদক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে লোকসংখ্যা ছিল ১৮, বদলি ও নানা কারণে তা কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। কোনো অভিযানের জন্য তাদের নেই একাধিক গাড়ির ব্যবস্থা। যে একটি গাড়ি আছে, তা বহু পুরোনো। এ গাড়িতেই চলে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান। এসব অভিযানে তাদের কাছে কোনো অস্ত্র থাকে না। এভাবেই চলছে জেলার ১৪টি থানা।কোনো অভিযান চালাতে হলে সাহায্য নিতে হয় র্যাব-৫ বা পুলিশের। রাজশাহীতে পুলিশ-র্যাব-গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ও বিজিবি সদস্যরা মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করলেও এ দপ্তরের কাজকর্ম একেবারে স্থবির বলা যায়। এ অবস্থায় মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের অভিযানে কী পরিমান মাদক উদ্ধার হয়, তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না।স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিদপ্তরের লোকজন মাদক উদ্ধারের পর তার সিংহভাগই বেচে দেয়। বাকি কিছু অংশ উদ্ধারের খাতায় জমা করে সরকারকে দেখায়। তবে এ অভিযাগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিকে মাসব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চললেও মাদক উদ্ধারের কোনো খবর নেই। নামেই শুধু অভিযান, কাজের কাজ চোখে পড়ে না।আঞ্চলিক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক লুৎফর রহমান বলেন, “মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কাজে দেশে ১৬ কোটি মানুষের জন্য এক হাজার ছয়শো কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। রাজশাহীতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এমএলএসএস মিলে রয়েছে ১১ জন। তারা রাজশাহীর বাইরে ৯, নগরীর ৪ ও জিআরপির এক থানা এলাকায় মাদক অভিযান পরিচালনা করে। পুরনো আমলের একটি গাড়ি তাদের ব্যবহার করতে হয়।”তিনি আরো বলেন, “অভিযানের সময় তাদের লোকসংখ্যা থাকে দু’-তিনজন। তাদের নেই নিজস্ব অস্ত্র বা নিরাপত্তার কোনো হাতিয়ার। নেই ঝুঁকি ভাতা, ঘরভাড়া বা চিকিৎসা খরচ। অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের কাজ করতে হয়। জীবনের নিরাপত্তার জন্য থানায় সুপারিশ করে সাথে পুলিশ নেয়া হয়। তা-ও এর সংখ্যা তিন থেকে পাঁচজন।লুৎফর বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে অভিযানে অনেক সময় পুলিশও পাওয়া যায় না। এতে অভিযানও বন্ধ থাকে। অভিযানে যাওয়ার পর অফিসে কোনো লোকজন থাকে না। প্রতিটি থানায় ভাগ করে কাজ করা হয়। এতে একটি থানায় একজন করেও ভাগে পড়ে না। গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের সময় লোকবলের অভাবে সেটি থমকে যায়।”অথচ দেখা গেছে, রাজশাহীর সীমান্ত এলাকাসহ চারদিকে রীতিমতো মাদকের হাট।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মোস্তফা জামাল বলেন, “লোকবলের অভাবে মাদক উদ্ধার অভিযান আলোর মুখ দেখে না। লোকবল বাড়ানো হলে এ অধিদপ্তরের ব্যর্থতা কেটে যাবে। সরকারের কাছে দ্রুত মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের প্রতিটি শাখায় লোকবল নিয়োগ করার জন্য আমি দাবি জানাচ্ছি।”