ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস আজ
দৈনিক মৌলভীবাজার ডেস্ক ::
আজ ২৪ জানুয়ারি, ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান এক তাত্পর্যপূর্ণ মাইলফলক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঔপনিবেশিক পাকিস্তানী শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। এতে স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্রতর হয়। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আন্দোলনকে নস্যাত্ করার হীন উদ্দেশ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে বঙ্গবন্ধুকে বন্দী করে। এ মামলার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা দুর্বার ও স্বতস্ফূর্ত আন্দোলন গড়ে তোলে। পাকিস্তানী সামরিক শাসন উত্খাতের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের এ দিনে সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হন নবকুমার ইনস্টিটিউশনের নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান। জনতার রুদ্ররোষ এবং গণ অভ্যুত্থানের জোয়ারে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকলকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পতন ঘটে আইয়ুবের স্বৈরতন্ত্রের। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় ঊনসত্তরের ২৪ জানুয়ারি ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৬৯ সালের এই দিনে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, এই দিন তত্কালীন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এ দেশের মানুষ। শহীদ হয়েছিল কিশোর মতিউর। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঊনসত্তরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে শহীদ মতিউরসহ সকল শহীদের অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানের তাত্পর্য তুলে ধরে বলেন, সকল শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ আধুনিক গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দল-মত নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করার উদাত্ত আহ্বান জানান।
দিবসটি উপলক্ষে শহীদ আসাদ পরিষদ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউশনে শহীদ মতিউরের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোপার্জিত স্বাধীনতার মঞ্চে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থানের তাত্পর্য তুলে ধরে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী।