১৪ খুনের রহস্য উদঘাটন, বোনকে ধর্ষণ করেছিলেন ঘাতক ভাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত মাসের শেষ নাগাদ একই পরিবারের ১৪ জন খুন হওয়ার কারণ উদঘাটন করেছে পুলিশ। খুনীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ওই পরিবারের এক কন্যা জানিয়েছেন, তারই এক বোনকে ধর্ষণ করেছিলেন ভাই হাসনাইন ওয়ারেকার । এ কথা জানাজানি হওয়ার পর বাবা-মা, স্ত্রী এবং দুই কন্যাসহ পরিবারের ১৪ জনকে গলা কেটে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন ৩৫ বছরের হাসনাইন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে থানের কাসারবাদভ্যালি এলাকায় নিজ বাড়িতে একের পর এক স্বজনদের খুন করেন হাসনাইান। ওই হত্যাযজ্ঞ থেকে বেঁচে গেছেন তার বোন ২২ বছরের সুবিয়া বার্মার। তিনিই পুলিশকে ঘাতক ভাই সম্পর্কে ওই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
খুনীর বোন সুবিয়া বার্মার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তার ভাই হাসনাইন তার নিহত বোন বাটুলকে ধর্ষণ করেছিলেন। গত জানুয়ারি মাসে বাটুল নিজেই তাদের এ কথা জানিয়েছিলেন। এ ঘটনায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন অবিবাহিত বাটুল। এই ঘটনাটি নিয়ে তারা কয়েক বোন মিলে আলোচনাও করেছিলেন। সম্ভবত বিষয়টি টের পেয়ে গিয়েছিলেন হাসনাইন। এরপর তিনি ওই লোমহর্ষক হত্যার ঘটনাগুলো ঘটান।
সুবিয়া আরো জানিয়েছেন, তার মা বেঁচে থাকার জন্য বার বার ছেলের কাছে আকুতি জানিয়েছিলেন। তার মা বলেছিলেন,‘আমি তোমাকে জন্ম দিয়েছি। আমি তোমার মা। দয়া করে আমাকে তুমি খুন করো না।’ সুবিয়া তখন একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। হাসনাইন তাকে বার বার দরজা খোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দরজা না খুললে সে তার বাচ্চাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছিলেন। পরে সত্যি সত্যিই তার মেয়েকে হত্যা করেছিলেন ঘাতক ভাই।
৩৪ বছরের হাসনাইন ইনকাম ট্যাক্সের কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু গত দু বছর ধরে তার চাকরি ছিল না। তিনি ধার দেনা করে চলতেন। পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে দফায় দফায় মোট ৬৭ লাখ রুপি ঋণ নিয়েছিলেন। মর্মান্তিক ওই হত্যাযজ্ঞের কয়েক মাস আগে দিল্লির মাজিওয়াদা এলাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়েছিলেন হাসনাইন। তবে কি কারণে তিনি এই ঘরটি ভাড়া নিয়েছিলেন তা জানতে পারেনি পুলিশ।
এর আগে পুলিশ নিহতদের বাড়ি তল্লাশির সময় কিছু ওষুধ উদ্ধার করেছিলেন, যেগুলো মানসিক অসুস্থতায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ঘাতক হাসনাইনের হাতে সাত শিশু ও ছয় নারীসহ মোট ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত শিশুদের বয়স তিন থেকে ১৬। হত্যার আগে স্বজনদের ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে অচেতন করেছিলেন ঘাতক। পরে সবার গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর গলায় ফাঁস দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন।