মৃত্যু পরোয়ানা শুনেছেন ‘বিমর্ষ’ নিজামী

নিউজ ডেস্ক : কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এ জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী তার মৃত্যু পরোয়ানা ও আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় শুনেছেন। বুধবার (১৬ মার্চ) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তাকে পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পরোয়ানা ও আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় শোনার পর নিজামী বলেছেন তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করবেন। এ সময় তাকে খুব বিমর্ষ ও চিন্তিত দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-২ এর ৪০ নং কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। সকাল সাড়ে ৯টায় লাল সালুতে মোড়া মৃত্যু পরোয়ানা ও রায়ের কপি কারাগারে এসে পৌঁছায়।
এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা সংক্রান্ত কাগজপত্র কাশিমপুর কারাগারে এসে পৌঁছায়।
তবে নিজামীর সঙ্গে দেখা করতে এখনও আবেদন করেনি তার পরিবার ও আইনজীবীরা। বুধবার সকাল ১০টায় নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন বলেছেন, ‘আমরা এখনও বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য কোনো আবেদন করিনি।’
কখন আবেদন করবেন সে বিষয়টিও জানাননি ব্যারিস্টার নাজিব। স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু পরোয়ানার কপি কারাগারে যাওয়ার পর আসামির পরিবার ও তার আইনজীবীরা সাক্ষাৎ করে থাকেন।
মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারকরা সই করার পর সন্ধ্যায় মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আর রাতে ওই পরোয়ানা পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। নিয়ম অনুযায়ী রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।
দণ্ড কার্যকরের আগে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) সুযোগ পাবেন বদরপ্রধান নিজামী। রিভিউ না টিকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষাও চাইতে পারবেন।
তার দুই আবেদন নাকচ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেবে। তার আগে আসামির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন পরিবারের সদস্যরা।
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নে ভূমিকাসহ তিন অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহালের রায় দেয় আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ গত ৬ জানুয়ারি এই রায়ের সংক্ষিপ্তসার জানিয়ে দেয়।
১৫৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় লিখেছেন ওই বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। বেঞ্চের অপর দুই সদস্যরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
২০০০ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আসা মতিউর রহমান নিজামীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩১ মার্চ, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মনমথপুর গ্রামে।