নাপিত থেকে কোটিপতি রমেশ!

নিউজ ডেস্ক: নাপিত থেকে শত শত কোটি টাকার মালিক হলেন ভারতের এক নাপিত। রমেশ বাবু নামের এ নাপিত প্রতিদিন নিজের বিলাসবহুল রোলস রয়েস গাড়িটি চালিয়ে কাজে আসেন।
এই ‘বিস্ময়’ নাপিতের কাহিনী জানিয়েছে ইন্ডিয়াটিভি….
বেশির ভাগ দিনেই তিন কোটি রুপির বিলাসবহুল ‘রোলস রয়েস গোস্ট’ গাড়ি চালিয়ে কর্মক্ষেত্রে আসেন রমেশ। এমন বিলাসবহুল গাড়ি শহরে আর মাত্র পাঁচজনেরই রয়েছে। তবে রীতিমতো কঠোর পরিশ্রমের উপার্জনের টাকা দিয়েই এ গাড়ি কিনেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয় ৬৭টি দামি গাড়ি সমৃদ্ধ একটি রেন্ট-এর-কার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও মালিক তিনি।
এ ব্যাপারে রমেশ বলেন, ‘আমার কপালটা খুলে গেছে’, নামিদামি রাজনীতিবিদ, সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, এমনকি সালমান খান, আমির খান, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের মতো সুপারস্টাররা আমার দোকানে আসে। নাপিতের কাজ করার পাশাপাশি রমেশের শখ হচ্ছে দামি গাড়ি সংগ্রহ করা।
১৯৮৯ সালের কথাই ধরা যাক, একটা সময় রমেশের বাবা মারা গেলে খুবই দুস্থ অবস্থায় দিন কাটে তাদের পরিবারের। সম্পত্তি বলতে ছিল ছোট্ট সেলুন দোকানটি। একটা সময় রমেশের মা সামান্য কিছু রুপির বিনিময়ে দোকানটি ভাড়া দিয়ে দেন। টানাহেঁচড়ার মধ্যে সংসার চলত তখন।
যদিও সে সময় থেকেই গাড়ির মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। একটা সময় পরিশ্রমের কিছু টাকা দিয়ে ‘মারুতি ওমনি’ গাড়ি কিনে নেন। এরপর এটি ভাড়া দিতে দিতেই পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি। অবশ্য রমেশের কথায় তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে সেখান থেকেই।
সেলুনের ব্যবসা থেকে লাভের পুরো টাকাই বিনিয়োগ করেন গাড়ির ব্যবসায়। ৯০-এর দশক শেষে তিনি ট্যাক্সি ব্যবসায় সফল হন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দেন ‘রমেশ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’।
পুরনো দিনের কথা বলতে গিয়ে রমেশ আবেগী হয়ে ওঠেন- ‘বাবা যেদিন মারা গেলেন, সেদিনের কথা আমার এখনো মনে পড়ে’। এরপর ১৯৯৪ সালে রমেশ সিদ্ধান্ত নেন, আর পড়ালেখা নয়। বাবার ব্যবসার হাল ধরতে হবে। তার স্কুলের পাশেই ছিল সেলুনটি। রমেশের হাতে শিগগিরই সেটি তরুণদের পছন্দের এক সেলুন হেয়ার স্টাইলিং জোন হয়ে ওঠে।
২০০৪ সালে নজর দেন বিলাসবহুল গাড়ির দিকে। এ সময় সরকার পর্যটন খাতে গুরুত্ব দেওয়ায় আরো সুবিধা হয় রমেশের। তখন থেকে রমেশের তুমুল গতিতে সামনে এগিয়ে যাওয়ার গল্প শুরু। প্রথমে একটি ‘মার্সিডিস ই ক্লাস লাক্সারি সেডান’ কেনেন। দাম পড়ে ৩৮ লাখ রুপি। এরপর একে একে আরো তিনটি মার্সিডিজ এবং তিনটি বিএমডব্লিউ। আর তারপর পুরো এক ডজন টয়োটা ইনোভা।
এখন রমেশের সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টির মত গাড়ি, ভ্যান এবং মিনি বাস রয়েছে। আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রয়েছে রোলস রয়েস সিলভার গোস্ট, মার্সিডিজ সি, মার্সিডিজ ই, মার্সিডিজ এস, বিএমডব্লিউ ৫, বিএমডব্লিউ ৬, বিএমডব্লিউ ৭ সিরিজের গাড়ি। এ ছাড়া মার্সিডিজের আরো কিছু গাড়ি এবং টয়োটার মিনি বাস রয়েছে রমেশের।
এগুলো ছাড়া রমেশের রয়েছে একটি ‘সুজুকি ইনট্রুডার’ বাইক, যার দাম ১৬ লাখ রুপি। এটি অবশ্য ভাড়া দেওয়ার জন্য নয়, রমেশের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য। ছুটির দিনে এই শখের মোটরযানে ঘুরে বেড়ান রমেশ।