আব্বু আম্মুকে চুল ধরে দেয়ালে আছাড় মারে

নিউজ ডেস্ক :: তখন দুপুরে বেলা। আম্মু আর আব্বু ঝগড়া করছিলো। তখন আব্বু আম্মুকে চুল ধরে দেয়ালে আছাড় মারে। পেটে লাথি মারে, গলা টিপে ধরে। দা উল্টো করেও মারে। এরপর আমি ঘরের বাইরে চলে যাই। পরে শুনি আম্মু মরে গেছে। আম্মুকে আব্বু সব সময় মারতো।
হত্যা করে আত্মহত্যার প্রচার চালানো বাবা আবুল কাশেমের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে এভাবেই মা’কে নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছিল সাত বছরের শিশু আব্দুল্লাহ।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে দেবহাটা উপজেলার চর বালিথা গ্রামের আবুল কাশেম ও আলেয়া খাতুন দম্পতির বড় ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আবুল বাসার।
আবুল বাসার তার বাবা আবুল কাশেমের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলে, আব্বু জুয়া খেলতো ও নেশা করতো। একবার পুলিশ তাকে ধরেও নিয়ে গিয়েছিল। সব সময় সে আম্মুকে মারতো। গত ৯ এপ্রিল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকেও আব্বু আম্মুকে মারে। সকালে উঠে আমি নানা বাড়ি চলে যাই। দুপুরে খবর পায় আব্বু আম্মুকে মেরে ফেলেছে। কিন্তু পুলিশকে বললেও পুলিশ তো আব্বুকে ধরছে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১০ এপ্রিল দুপুরে দেবহাটা উপজেলার চর বালিথা গ্রামের আবুল কাশেম তার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী আলেয়া খাতুনকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যা করে। ঘটনার দিন ও তার আগের দিনও ছেলেদের সামনে আলেয়া খাতুনকে নির্যাতন করেছিল আবুল কাশেম। আবুল কাশেম প্রতিনিয়ত জুয়া খেলতো ও নেশা করতো। জুয়ায় হেরে এসে সে তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য মারধর করতো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আলেয়া খাতুনের ভাই আনারুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র বোনের সুখের জন্য আমরা দফায় দফায় আবুল কাশেমকে প্রায় নয় লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি ছিল তার। এখন আমরা বিচারও পাচ্ছি না। থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। কোন উপায় না পেয়ে গত ১৮ এপ্রিল আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিলেও উৎকোচ নিয়ে দেবহাটা থানা মামলা রেকর্ড করেনি। এখন আবুল কাশেম আমার ভাগ্নেদের হত্যার চক্রান্ত করছে।
সংবাদ সম্মেলনে হত্যা মামলা রেকর্ড, পুনঃময়নাতদন্ত ও হত্যাকারী আবুল কাশেমের শাস্তির দাবি জানিয়েছে আলেয়া খাতুনের দুই ছেলেসহ স্বজনরা।