হাসপাতালে রেখে পালালো যুবক, নির্যাতনে জর্জরিত শিশুটি কে?
নিউজ ডেস্ক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বিছানায় অচেতন পড়ে আছে মেয়ে শিশুটি। তার বয়স আনুমানিক ১০ বছর। এই শিশুটির জীবন এখন শঙ্কায়। তার সারা শরীরে জখমের চিহ্ন। নতুন আঘাতের সঙ্গে আছে পুরনো ঘাঁ’ও। তবে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত জানা যায়নি হতভাগী এই শিশুটির পরিচয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে গুরুতর আহত ও অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ভর্তি করে শরীফুল নামের এক যুবক পালিয়ে গেছেন। হাসপাতালের নথিপত্রে সেই শরীফুল লিখেছেন- মেয়েটির নাম হাসিনা। তিনি ‘হাসিনার’ আত্মীয়। মোহাম্মদপুর এলাকার সুনিবির হাউজিং সোসাইটি একটি ভবন থেকে শিশুটিকে এনেছেন শরীফুল। তবে হাসপাতালে ভর্তি করেই তিনি গা ঢাকা দেয়ায় সন্দেহ হয়েছে পুলিশের।
ধারণা করা হচ্ছে- শিশুটির ওপর দীর্ঘদিন অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটির জ্ঞান ফিরেনি। তার পরিচয় উদ্ধার এবং পলাতক শরীফুলকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিদ্দিকুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে শরীফুল নামে এক যুবক শিশুটিকে ঢামেকে ভর্তি করায়। ঢামেকের ২০৬ নম্বর মহিলা ওয়ার্ডে শিশুটি ভর্তি আছে। হাসপাতালের খাতায় শিশু হাসিনার বাবা নাম মৃত আব্দুল রাজ্জাক এবং গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার পূর্ব শাহাপুর, ফরিদগঞ্জ উল্লেখ করা হয়।
তখন শরীফুল জানিয়েছেন, শিশুটিকে তিনি মোহাম্মদপুর এলাকার সুনিবির হাউজিং সোসাইটি ভবন থেকে এনেছেন। তিনি নিজে গাজীপুর শ্রীপুরে মুরগির ব্যবসা করেন। পরে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের টাউন হলের মুরগী ব্যবসায়ী তিনি।
পরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন, শরীফুল শিশুটিকে ভর্তি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এসময় তার মোবাইল ফোনটি রাখা হয়। কিন্তু ভর্তির পর শরীফুল ফোন রেখেই পালিয়ে যান। শরীফুলের উল্লেখিত বাসাটি আদাবর থানা এলাকায় হওয়ায় বিষয়টি আদাবর থানা পুলিশকে জানায় ঢামেক ফাঁড়ির পুলিশ।
রাতে আদাবর থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সুনিবির হাউজিং সোসাইটিতে খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু ওই ভবনের বাসিন্দারা বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন। শরীফুলের ব্যাপারেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। আর শিশুটি অচেতন থাকায় কিছু জানা সম্ভব হয়নি। তার জ্ঞান ফিরলে আসল ঠিকানাসহ সবকিছু জানা যাবে।’
শুক্রবার দুপুরে ঢামেকের মহিলা ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. আসিফ মাহমুদ জানান, শিশুটির সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথা, মুখমণ্ডলেও জখমের চিহ্ন। শিশুর রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো স্বজন না থাকায় এসব করা হয়নি। ফলে তার জ্ঞান না ফেরার কারণ ও কি সমস্যা এসব জানা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার রাতে ঢামেকের ক্যাজুয়োলিটি ব্লকের সহকারী রেজিস্টার ডা. মোস্তফা আল মামুন বলেন, ‘শিশুটির জ্ঞান ফিরেনি। তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু হয়েছে।’