ওমরাহ পালন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক :: সৌদি আরব পৌঁছে পবিত্র ওমরাহ পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (০৩ জুন) মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রী তার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও সফর সঙ্গীদের নিয়ে জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছান। হারাম শরীফের পাশে মক্কা গেস্ট প্যালেসে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তিনি সঙ্গীদের নিয়ে হারাম শরীফে যান।
হারাম শরীফে পরিবারের সদস্য ও সফর সঙ্গীদের নিয়ে মধ্যরাতের পর কাবাঘর তাওয়াফ শুরু করেন। তাওয়াফ শেষে হারাম শরীফে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন প্রধানমন্ত্রী এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাতে অংশ নেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী সাফা-মারওয়া প্রদক্ষিণ করেন। মক্কায় (শনিবার-০৪ জুন) তিনি ফজরের নামাজ আদায় করেন। ওমরাহ পালন শেষে প্রধানমন্ত্রী মক্কা গেস্ট প্যালেসে অবস্থান করছেন।
অন্যান্য সফর সঙ্গীদের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সৌদিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি গোলাম মসীহ্, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জনলুন আবেদীন, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ ওমরাহ পালন করেন।
এর আগে শুক্রবার সৌদি সময় ৮টার কিছু আগে বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে জেদ্দা কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ বিন আব্দুল আজিজ, সামরিক বাহিনীর প্রধান লে. জেনারেল মোহাম্মদ আওয়াদ আসিম, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, রিয়াদ দূতাবাসের প্রতিরক্ষা শাখার প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফারুক উল হক, জেদ্দার কনসাল জেনারেল একেএম শহীদুল করিম, রিয়াদ দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান নজরুল ইসলামসহ দূতাবাস, কনস্যুলেট এবং সৌদি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংর্বধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কিং ফয়সাল প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি ক্রাউন প্রিন্স আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, নৈশভোজে অন্যদের মধ্যে ছিলেন শেখ রেহানা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীসহ সৌদি আরবের হজ ওমরাহ মন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন, ওআইসির মহাসচিব ইয়াদ বিন আমিন মাদানি, আইডিবির প্রেসিডেন্ট আহমেদ মোহাম্মদ আলি আল মাদানি।
নৈশভোজ শেষে কিং ফয়সাল প্যালেস থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাসস্থল জেদ্দা কনফারেন্স প্যালেসে আসেন। এখানে কিছু সময় অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রী সফর সঙ্গীদের নিয়ে হারাম শরীফের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া ৪টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স এবং বাংলাদেশ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করার কথা রয়েছে।
রোববার জেদ্দা নগরীর আল আন্দালুসে সৌদি বাদশাহের আল সালাম প্রাসাদে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন নায়েফ বিন আব্দুল আজিজ বাদশাহের প্রাসাদে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
আল সালাম প্রাসাদে সৌদি বাদশাহ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়েও আলোচনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সফরে সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বিভিন্ন প্রকল্পে সৌদি সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং হজ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।
রোববারই প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল জেদ্দা কনফারেন্স প্যালেসে বেশ কয়েকজন সৌদি মন্ত্রী এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
একই দিন কনফারেন্স প্যালেসে সৌদি সরকারের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপমন্ত্রী সালমান বিন সুলতান আল সৌদ এবং সৌদি বাদশাহের রয়্যাাল কাউন্সিলের উপদেষ্টা ইয়াসের আল মিয়ার প্রথানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দা থেকে বিমানে মদিনায় যাবেন এবং সেখানে মদিনা হিলটন হোটেলে অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী সেখানে মসজিদে নববীতে আসর এবং মাগরিবের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করবেন।
মদিনার প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার সৌদি সময় সকাল সাড়ে ১০টায় দেশের উদ্দেশে মদিনা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রী এবং সফর সঙ্গীদের ঢাকা ফেরার কথা।
এর আগে, ২০০৯ সালে তৎকালীন সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের আমন্ত্রণে সৌদি আরব সফর করেন শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালের নভেম্বরেও ওমরাহ পালনের উদ্দেশে আরও একবার সৌদি যান তিনি।