সিলেট কারাগারে যত ফাঁসি

নিউজ ডেস্ক :: সিলেট কারাগারে প্রথম ফাঁসি কার্যকর হয় ১৯৩৪ সালের ২ জুলাই। ওইদিন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অস্ত্রাগার লুটের দায়ে বিপ্লবী অসিত ভট্টাচার্যের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিলো।
১৭৮৯ সালে সিলেট কারাগার প্রতিষ্ঠার পর সেটাই ছিল প্রথম ফাঁসি কার্যকরের ঘটনা। এরপর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে এক-এক করে ছয় আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কারাগারটিতে সর্বশেষ বুধবার প্রথম প্রহরে ফাঁসিতে ঝুলানো হয় হবিগঞ্জের চা শ্রমিক মাকু রবি দাসকে। তিনি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সূত্র জানায়, ১৯৩৪ সালের পর ১৯৩৭ সালে স্বামী হত্যার দায়ে মৌলভীবাজারের লংলার জমিদার কন্যা করিমুন্নেসার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। এরপর দীর্ঘ ৭৩ বছর পর ২০১০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রহরে স্বাধীন বাংলাদেশে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে একই সঙ্গে জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার রেঙ্গা দাউদপুর গ্রামের সাবুল মিয়া ও মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মিরাপাতন গ্রামের আলম উদ্দিন স্বপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার রেংগাদাউদপুর গ্রামের সাবুল মিয়া তার প্রতিবেশী জনৈক মুক্তাদির আলীকে ২০০০ সালের ১২ নভেম্বর কুড়াল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। বিচারকালে আদালতে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৩ সালের ৪ অক্টোবর সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত বিশেষ আদালতে সাবুলকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
একই বছরের ১ ডিসেম্বর যৌতুকের দাবিকৃত টাকা না পেয়ে মৌলবাজারের বড়লেখা থানার মিরার পাতন গ্রামের আলম উদ্দিন স্বপন তার স্ত্রী খোদেজা বিবি কমলাকে গলা টিপে হত্যা করে। এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বিচারকালে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে স্বপনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
এছাড়া, ২০১১ সালের ২ মার্চ রাত ১২টার পর খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত চা শ্রমিক রবি মুন্ডার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ওই সময়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারাগার থেকে দুজন জল্লাদ সিলেট গিয়ে এ ফাঁসি কার্যকর করেন। নালুয়া চা বাগানের এক কবিরাজকে হত্যার দায়ে ২০০৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর চা শ্রমিক রবি মুন্ডার ফাঁসির আদেশ দেন হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ।
সর্বশেষ বুধবার (১৩ জুলাই) প্রথম প্রহরে (রাতে ১২টা ১ মিনিট) প্রতিবেশীকে খুনের দায়ে সিলেটে কেন্দ্রীয় কারাগারে মাকু রবি দাসের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মাকু রবি দাস হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দারাগাওয়ের সমাধনী রবি দাসের ছেলে।
২০০১ সালের ৩১ অক্টোবর রাতে মাত্র ২ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রতিবেশী নাইনকা রবি দাসকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মাকু রবি দাস। ২০০৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দায়রা ৫৭/২০০২ মামলায় বিচারে অভিযোগ সন্দেহজনকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হবিগঞ্জ আদালতে অতিরিক্ত দায়রা জজ মাকু রবি দাসকে মত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন।