শ্রীমঙ্গলে হাঁসে হাসির আশা ফারজানা-মায়ারুনদের
শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা :: ২০১৪ সালে ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডের (ক্রেল) একটি প্রকল্পের আওতায় ২৫টি হাঁস পান হাইল হাওরের ফারজানা (৪৫)। শ্রীমঙ্গলের কালপুর ইউনিয়নের বরুনা এলাকায় তার বাস। সেই ২৫টি থেকে তার হাঁসের সংখ্যা এখন একশো।
ফারজানা জানান, হাঁস ও ডিম বিক্রি করে তিনি এখন বেশ স্বাবলম্বী ও স্বচ্ছল। প্রতিটি হাঁস দুইশো থেকে আড়াইশো এবং এক হালি ডিম ৩৪ টাকায় বিক্রি করেন।
ওই প্রকল্পে ফারজানার মতো আরও ১৬৯ জনকে হাঁস দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ক্রেলের কমিউনিকেশন অফিসার (নর্থ-ইস্ট রিজিয়ন) ইলিয়াস মাহমুদ বলেন, ২০১৪ সালের ওই প্রকল্পে দুই মাসের খাবারসহ ১৬০ জন নারীকে ২৫টি ও ১০ জনকে ১শটি হাঁস দেওয়া হয়।
সাতছড়ি, রেমা-কালেঙ্গা, হাইল হাওড়, হাকালুকি, খাদিম নগর ও লাউয়াছড়া (নর্থ-ইস্ট রিজিয়ন) অঞ্চলের নারীদের ওই প্রকল্পের মধ্যে ধরা হয়। উদ্দেশ্য ছিলো, এসব বন ও হাওর অঞ্চলের মানুষ যদি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে তাহলে তারা প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি করবে না। তবে হাঁসের এই প্রজেক্ট বনাঞ্চলে তেমন সফল হয়নি বলে জানান ইলিয়াস।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বনাঞ্চলে পানির উৎস কমে যাচ্ছে। বনের মধ্য দিয়ে যে ছড়াগুলো বয়ে গেছে সেগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় হাঁসেরা চরে বেড়ানোর পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছে না। হাওর অঞ্চলে এই অসুবিধা নেই বলে সফল হয়েছে।
ফারজানাদের দেওয়া হয়েছে খাকি ক্যাম্বেল ও জিনডিং হাঁস। ক্যাম্বেল বছরের ডিম দেয় প্রায় ২৩০ থেকে ২৫০টি এবং জিনডিং দেয় ২৫০টি।
গত ১৮ জুলাই নতুন করে নর্থ-ইস্ট জোনের ১০ নারীকে দেওয়া হয়েছে ২৫টি করে হাঁস।
এ নিয়ে ক্রেলের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু হাঁসই দিচ্ছি না, হাঁসপালনের উপর তাদের একদিনের ট্রেনিংও দিচ্ছি। উপজেলা অফিস থেকে লাইভস্টক অফিসারকে এনে তাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।
নতুন প্রকল্পে হাঁস পাওয়া একজন হাইল হাওরের মায়রুন বেগম (৪৮)। ফারাজানাদের পথ ধরে হাঁসে হাসির আশা করছেন। বলেন, পাঁচ-ছয় দিন হলো হাঁস পেয়েছি। ভালো লাগছে। ভালো করে পালবো। আল্লাহর রহমতে লাভ হবে।