মীর কাসেমের রেখে যাওয়া সম্পদের পাহাড় কী করা হবে!
নিউজ ডেস্ক: শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে দশটায় কার্যকর হয় যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড। ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এই ব্যক্তি জামায়াতে ইসলামীর একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন।
মীর কাসেম ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য। শীর্ষ পদে না থাকলেও তাকে জামায়াতে ইসলামীর অর্থ বিত্তের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দলের অর্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলোর দেখ-ভাল তার হাতে ছিল এবং বিদেশী তহবিল বিলি বন্টনের কাজও তিনিই করতেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার ঘটনাটি তাই খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এ বিষয়ে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ড: এম এ হাসান মনে করেন, এ বিচারের মধ্য দিয়ে সত্য ও ন্যায়ের শক্তি প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মীর কাসেম আলী পর্দার অন্তরালে জামাতের জন্য বড় একটা রোল প্লে করতেন, বিশেষ করে জামাতের আর্থিক শক্তির বড় অংশ তারই নিয়ন্ত্রণে ছিল, এটা সবার জানা। এখন তার বিত্তের বিষয়টি কিভাবে সরকার হ্যান্ডেল করে সেটাই দেখার বিষয়’।
ড: এম এ হাসান আরও বলেন, ‘মীর কাসেমের যে সমস্ত অর্জিত সম্পদ লুটের মাধ্যমে, অত্যাচার বা নির্যাতনের মাধ্যমে, মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত সেগুলো সরকার কিভাবে দেখছে বা কিভাবে তদন্ত করছে সেটা দেখার বিষয়’। মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড তার দলের ওপর প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করেন এম এ হাসান।
“আর্থিক কারণে জামাতের শক্তির প্রতীক ছিলেন মীর কাসেম। তার মৃত্যুদণ্ডের কারণে একদিকে জামাত দুর্বল হবে, আরেক দিকে দেশের মানুষ অনেক বেশি প্রত্যয়ী হবে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক আরও বলেন, জামাতকে নিয়ে যারা রাজনৈতিক খেলা খেলছেন বা খেলবেন, তাদের কাছেও বিষয়টি ভাবার যে জামায়াত এখন অনেক দুর্বল হয়ে যাবে কারণ অর্থের প্রভাব, যেটি নির্বাচনে মোক্ষম ভূমিকা পালন করে সেটি এখন আর মীর কাসেমের মৃত্যুর পর তেমনভাবে থাকবেনা বলে মনে করেন তিনি।
মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে এটি বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একাধিকবার বিবৃতি দিয়েছে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে সমস্ত তদবির হয়েছে সেগুলো মৃত্যুদণ্ড বন্ধের জন্যই করা হয়েছে।
“এদের অপরাধসংক্রান্ত যে বিবরণ সেগুলো সেভাবে হয়তো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি”।
“তবে মনে হয় এক সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের কিছু ভ্রান্তি অনুধাবন করতে পারবেন। পরবর্তীতে তারা সমঝোতায় আসতে পারবেন কোথায় ভুল ছিল, কতটা ঠিক ছিল”। মীর কাসেম আলীর অপরাধমূলক কর্মকান্ডে তার যে গুরু ছিল তাদের কর্মকান্ডও সামেনে নিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সূত্র: বিবিসি