ড়লেখায় হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ছাত্র-জনতার মারধর, বিক্ষোভ-অবরোধ

বড়লেখার দক্ষিণভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষার সচিব আকবর আলীকে লাঞ্ছিত করার জের এবং প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় এ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলামকে বুধবার দুপুরে ছাত্র-জনতা গণধোলাই দিয়ে নিজ অফিস কক্ষে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ রাখে। এসময় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা দুইঘন্টা টায়ার পুড়িয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার দক্ষিণভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ বোর্ডের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আকবর আলী। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলাম নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন। প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বোর্ড আশুক আহমদ নামে এক প্রার্থীকে নির্বাচিত করেন। সচিব আকবর আলী অভিযোগ করেন, নিয়োগের পরবর্তী কার্যক্রম চালাতে গেলে শাহীদুল ইসলাম প্রভাব বিস্তার শুরু করেন এবং স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটান। মঙ্গলবার স্কুলের অফিস সহকারীকে নিয়ে তিনি নিয়োগের কাজ চালাতে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল জোরপুর্বক নিয়োগের ফলাফল সিটসহ জরুরী কাগজপত্র কেড়ে নেন, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং সাদা কাগজে আন্ডার টেইকেন নেন। এ ঘটনায় বুধবার শিক্ষক আকবর আলী থানায় জিডি করেন।
সিনিয়র শিক্ষক আকবর আলীর লাঞ্ছিতের ঘটনা জানার পর স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। শিক্ষার্থী ফয়সল, মুক্তম, নাইম, সুনু, ইসতিয়াক, জোবেল, এনাদুলম রাশেদ প্রমূখ জানায়, বুধবার দুপুর দু’টায় আমরা কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে আকবর আলী স্যারকে শারীরিক লাঞ্ছিতের বিষয়ে জানতে গেলে তিনি দরজা বন্ধ করে আমাদেরকে মারধর করেন। এঘটনার পর ছাত্র, অভিভাবক ও স্থানীয় জনতার মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিক্ষুব্দরা শাহীদুল ইসলামের অফিস কক্ষে ঢুকে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ রাখে।
খবর পেয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ সহিদুর রহমান ও এসআই জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় শাহীদুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসা নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম বানচালের চেষ্টার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় তার বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিয়ে মিছিল বের করে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলাম জানান, কারা তাকে মারধর করেছে তা এ মুহুর্তে তিনি বলবেন না।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মুকিত লুলু জানান, স্বচ্ছ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করা হয়েছে।
ওসি মোহাম্মদ সহিদুর রহমান জানান, হাসপাতালে নেয়ার পর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শিক্ষক সমিতির হেফাজতে শাহীদুল ইসলামকে সিলেটের একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এব্যাপারে এখনও থানায় কোন মামলা হয়নি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজির উদ্দিন জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলামকে জনরোষ থেকে বাঁচাতে গিয়ে ৮ ব্যক্তি আহত হয়েছেন।