আদর্শ নিয়ে কাজ করলে সাংবাদিকদের বিচ্যূত হতে হবে না —কমলগঞ্জে প্রধান বিচারপতি
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস.কে সিনহা) বলেছেন, আদর্শ নিয়ে কাজ করলে সাংবাদিকদের বিচ্যূত হতে হবে না। মফস্বলের সাংবাদিকদেরও অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। সেজন্য নীতিবান হয়ে ভালোভাবে পড়াশুনা করে যে সিঁড়ি বেয়ে উঠবে সেই প্রতিষ্ঠিত হবে।
সাংবাদিকরা জাতির বিবেক ও রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা স্বাধীন সাংবাদিকতা করে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বাংলাদেশেও এ ধরণের কিছু সাংবাদিক রয়েছেন। পড়াশুনা, জ্ঞানার্জন, সততা, নিষ্ঠা আর বস্তুনিষ্টভাবে সাংবাদিকতা করলে পরবর্তীতে খ্যাতিমান সাংবাদিক হওয়া যায়। সাংবাদিকতা, শিক্ষকতাসহ যে কোনো ক্ষেত্রে নিজেকে তৈরি করে নিতে পারলে এমনিতেই সম্মান পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের তিলকপুরস্থ তাঁর গ্রামের বাড়িতে অবস্থানকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বুধবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসেন। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে কমলগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে শুরুতেই সাংবাদিকরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে উপজেলা পর্যায় থেকে সাংবাদিকরা কে কি ধরণের সুবিধা ভোগ করেন তা জানতে চান। পরে তাঁর যোগ্যতা অর্জন সম্পর্কে বলেন, জীবনের প্রথম দিকে কঠোর পরিশ্রম ও কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে তাকে। তিনি নিজেও একসময় কষ্ট করে চেষ্টা ও যোগ্যতা অর্জনের মধ্য দিয়ে আজ বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হয়েছেন। অন্যায়ের সাথে কখনও আপোষ করেননি। আদর্শ ও যোগ্যতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠে কারও কাছে ধর্ণা দিতে হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই এলাকা পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত হলেও এখানকার পাহাড়, টিলা আর সবুজ বেস্টনি কেটে যে হারে হোটেল ও কটেজ নির্মিত হচ্ছে এবং গাছ-গাছালি উজাড় হচ্ছে তাতে বনভূমিকে বিনাশ করে ফেলা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে মিডিয়াকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করার আহবান জানান তিনি।
প্রধান বিচারপতি দীর্ঘ একঘণ্টা সময়ে মতবিনিময়কালে বলেন, যোগ্যতা অর্জন করলে কোনো কিছুই আটকাতে পারে না। প্রচুর টাকার সামাজিক মূল্য নেই। কিছু মানুষ টাকার পিছনে গিয়ে নীতিহারা হয়ে যায়। নীতি বজায় রেখে চললে মর্যাদা পাওয়া যাবে। যেখানে টাকা থাকে না সেখানে স্থায়িত্ব পাওয়া যায়। টাকা স্থায়ী নয়। আত্মপ্রচারে অনিহা প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, মানুষ চরম শিখরে উঠলে গ্রামে আসে না। তিনি গ্রামীণ পরিবেশে থাকতে চান। তাঁর বাবা-মা এর নামে পাঠাগার একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়াও এলাকার সার্বিক উন্নয়ন এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির আরও উন্নয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।