কবি-ছড়াকার আহমদ সোহেল-এর প্রথম গ্রন্থ ‘শব্দের সুখাশোক’-এর মোড়ক উন্মোচন
বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক, গবেষক প্রফেসর নন্দলাল শর্মা বলেছেন, কবির মন থেকে যে কথা বের হয়ে আসে সেটাই কবিতা হয়ে যায়। ‘শব্দের সুখাশোক’ একটি ব্যতিক্রমী কাব্যগ্রন্থ। আহমদ সোহেল মূলত একজন ছড়াশিল্পী। তিনি ছন্দ মিল দিয়ে কবিতা লিখেছেন। প্রবাসে থেকেও যার মন থাকে এদেশের মাটি ও মানুষের জন্য। তার লেখায় তিনি মানুষের অধিকার আদায় ও অন্নের কথা বলেছেন। ছড়া লেখা খুব কঠিন কাজ। যারা ছড়া লেখেন তারা অনেক বড় কাজ করেন সাহিত্যের জন্য। ছড়া শুধু শিশুতোষ নয়, ছড়া মিছিলের স্লোগান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
কৈতর প্রকাশন সিলেট-এর উদ্যোগে কবি-ছড়াকার আহমদ সোহেল-এর প্রথম গ্রন্থ ‘শব্দের সুখাশোক’ প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
গতকাল রোববার নগরীর দরগাহ গেইটস্থ দেশের অন্যতম প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে এ প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
গল্পকার ও সংগঠক সেলিম আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে বিশিষ্ট কবি মুকুল চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে কবি আইনজীবি কামাল তৈয়ব, দৈনিক জালালাবাদ-এর নির্বাহী সম্পাদক আবদুল কাদের তাপাদার, মাসিক আল ইসলাহ সম্পাদক ছড়াকার আব্দুস সাদেক লিপন এডভোকেট, ছড়াকার পিয়ার মাহমুদ বক্তব্য রাখেন এবং মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দৈনিক সিলেটের ডাক-এর সাহিত্য সম্পাদক কবি আবদুল মুকিত অপি। গল্পকার তাসলিমা খানম বীথির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৈতর সিলেট-এর পরিচালক রোটারিয়ান আব্দুল মুহিত দিদার। ক্বারী আবদুল বাসিতের পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে ও আবদুল বাতিন ফয়সলের ব্যবস্থাপনায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ বশিরুদ্দিন, কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরী, সাইক্লোন সিলেট-এর সভাপতি হারান কান্তি সেন, কবি অধ্যক্ষ বাছিত ইবনে হাবীব, ছড়াকার মতিউল ইসলাম মতিন, প্রাকৃত সম্পাদক প্রভাষক কবি মামুন সুলতান, দ্রুবতারা সম্পাদক ছড়াকার কামরুল আলম, সিলেট লেখিকা সংঘের সাধারণ সম্পাদক কবি মাসুদা সিদ্দিকা রুহি, কবি ও কবিতার আসর সুপার এডমিন কবি হাসান স্বজন, সিলেটের কবি ও কবিতা-এর এডমিন সাইয়িদ শাহিন, উত্তরণ লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কবি খান অপু, পিপড়া সম্পাদক কবি মিনহাজ ফয়সল, কবি নাঈমা চৌধুরী, ঔপন্যাসিক আলেয়া রহমান, মাসিক চন্দ্রবিন্দু সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, দি আর্থ অব অটোগ্রাফ সম্পাদক আবদুল কাদির জীবন, কবি সাদিক সিরাজী, কবি তোরাব আল হাবীব, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবি মুকুল চৌধুরী বলেন, কবিতার শহর ও শিল্পের শহর প্যারিসে কবি আহমদ সোহেল বাসিন্দা। সুখ এবং অসুখ এই দুই শব্দকে তিনি একসাথে গেথেছেন তার কাব্যগ্রন্থে। এটি মূলত একটি ছড়া ও কবিতার বই। একজন কবির লেখা দেখে তার মন ও মানসিকতা নির্নয় করা যায়। তার অনেক লেখায় একজন হৃদয়বানের ছায়া দেখা গেছে। ‘শব্দের সুখাশোক’ গ্রন্থে তিনি যা বলতে চেয়েছেন তা খুবই কাব্যিক ও নান্দনিকতার সাথে বলেছেন।
মূল প্রবন্ধে কবি আবদুল মুকিত অপি বলেন, বই হলো লেখকের পাসপোর্ট। প্রথম বই হিসেবে আহমদ সোহেলের এ পাসপোর্ট খুবই সার্থক ও মূল্যবান বলা যায়। লেখক-কবিদের যে কোন বিমানবন্দর তিনি অনায়েসে অতিক্রম করতে পারবেন এটি প্রদর্শন করে। ছড়ার মিশ্রণ থাকলেও মুলত এটি কাব্যগ্রন্থ। ভাব ভাষা ছন্দের তুলনামুলক যুতসই সমন্বয় ঘটিয়েছেন তিনি।
আবদুল কাদের তাপাদার বলেন, প্রথম বই মানে একজন লেখকের কাছে তার সন্তান সমতুল্য। এজন্য প্রথম বইটি লেখকের জন্য খুব দামি বিষয়। আশা করি এই বইটি পাঠক সমাজে সমাদৃত হবে ও সাহিত্যাঙ্গনে নতুন ধারা সৃষ্টি করবে। দেশ ও জাতির স্বার্থের জন্য প্রবাসে থেকেও কবিকে লিখে যেতে হবে। তিনি বইটির বহুল প্রচার কামনা করেন।
অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কবি আহমদ সোহেল বলেন, অনেক কম সময় নিয়ে মাত্র এক সপ্তাহের প্রস্তুতিতে এই বইটি বের করেছি। এজন্য ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। আগামীতে কোন বই বের করলে ইনশাআল্লাহ এই ভুল কাটিয়ে উঠতে পারবো। আমার বইটি যদি বিন্দুমাত্র কারো উপকারে আসে তবেই আমার লেখক জীবনের স্বার্থকতা।
সভাপতির বক্তব্যে গল্পকার সেলিম আউয়াল বলেন, কবি আহমদ সোহেলে লেখালেখির শুরু মূলত ছড়া দিয়ে। এই বইটিতে তিনি
কবিতা, ছড়া ও লিমেরিক দিয়ে সাজিয়েছেন। অনেক ছড়া অতিক্রমী কবিতা রয়েছে তার লেখার মধ্যে। বইটি পাঠকদের সুখপাঠ্য হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।-বিজ্ঞপ্তি