চা শ্রমিকদের বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টারঃ
দেশের চা বাগানগুলোতে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে তাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্প্রসারণেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় এই সাত জেলার প্রায় ১৬২টি চা বাগানে ৩৯ লাখ ৮ হাজার ২৩৮ শ্রমিক কাজ করেন। এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই নারী। দেশের এসব চা বাগানে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক ও অপ্রতুল। তাই এর মানবিক দিক বিবেচনায় পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে উন্নতির জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করছে। এ জন্য চা বাগানে পানি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এ অর্থ জোগান দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর এটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। গত ৭ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এটিকে অনুমোদন করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে চা বাগানের কর্মীদের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হবে। ফলে তা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্প প্রস্তাবনায় জানা গেছে, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণে বাগানগুলোয় রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম, রিং ওয়েল অগভীর ও গভীর নলকূপ, অগভীর ও গভীর তারা নলকূপ স্থাপন করা হবে ৩ হাজার ৪টি।
বায়োফিল টয়লেট নির্মাণ করা হবে ১০০টি। কমিউনিটি ল্যাট্রিন স্থাপিত হবে ১০৭টি। স্যানিটারি ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হবে ৯ হাজার ৩৯৮টি। এ ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় বাগানের কর্মী ও তত্ত্বাবধায়নকারীদের জন্য কারিগরি, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও হাইজিন প্রমোশন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দেশের চা বাগানগুলোয় নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছিল না। এতে শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করত। বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবে তারা নানা রোগে আক্রান্ত হতো। বিষয়টি মানবিক বিধায় সরকার এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। এটি বাস্তবায়িত হলে চা বাগানের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত হবে।’