স্টাফ রিপোর্টারঃ
মুজিবুর রহমান জিতু ছিল ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় ধারী শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতো না। সবাই নিরবে সহ্য করত। কিন্তু যেইনা তার নিহতের খবর সেই আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করেছেন এলাকাবাসী। জনমনে এসেছে স্বস্তি।
মুজিবুর রহমান জিতু (২৬) শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার রায়শ্রী এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে গুলিতে নিহত হন। নিহত জিতু শহরের বেরিরচর এলাকার ফরকিছ মিয়ার ছেলে।
দীর্ঘদিন জিতু বড় ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। তার বিরোদ্ধে ১২টি মাদক মামলা ছিল। তার লাশের পকেটেও ছিল ৩১০ পিস ইয়াবা।
জানা গেছে, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে পরে পুলিশ গুলি চালায়। পরে জিতুকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। জনমনে নেমে আসে স্বস্তি। জেলার রায়শ্রী, চাদনীঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের প্রশংসার পাশাপাশি তার পেছনে থেকে যারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দিত তাদেরকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন সর্বমহল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে জিতুর ব্যবহৃত ইংরেজীতে লেখা আহমেদ জিতু ফেইসবুক একাউন্ট গেলে দেখা যায়, ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর পৌর শহরের ৫ নং ওয়ার্ডে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রচারণায়, মহান বিজয় দিবস সহ বিভিন্ন দিবসে ছাত্রলীগের ব্যানারে তার নেতৃত্বে কর্মসূচী পালিত হয়। ব্যানারে জেলা ছাত্রলীগের নামও ব্যবহার করতে দেখা যায়। কিন্তু জেলা ছাত্রলীগের কোন পদ-পদবীতে সে না থেকেও জেলা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করায় জেলা নেতৃবৃন্দ কোন প্রতিবাদ করেননি (!)।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমিন জানান, সে কখন কি পরিচয় দিত জানি না তবে সে ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে ছিল না। এ ছাড়া আমার জানা মতে কোনোদিন তাকে ছাত্রলীগের কোনো কর্মকা-ে দেখিনি।
মৌলভীবাজারের চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা জিতু ছিল জেলার ইয়াবার গড ফাদার। ৩ মাস আগেও সে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় কিন্তু প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় বারবার সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যেত।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম জানান, “নিহত জিতু জেলার সবচেয়ে বড় মাদক বিক্রেতা। তার বিরুদ্ধে ১০/১২টি মাদক মামলা এবং একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। জিতু খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ ছিল। সে হিং¯্র ছিল বলেই তাকে ধরতে গেলে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে।”
উল্লেখ্য, জিতুর বিরোদ্ধে ১২টি মাদকের মামলা সহ ১৮ থেকে ২০টি মামলা রয়েছে। সে মৌলভীবাজার শহরের অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার রায়শ্রী এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দারী মুজিবুর রহমান জিতু।