কমলগঞ্জে নতুন আরো ২টি ভাঙ্গন – বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে। রবিবার সারা দিন ব্যাপী অবিরাম বর্ষনে ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রবিবার বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রবিবার বিকালে নতুন করে আদমপুর ইউনিয়নের হকতিয়ারখলার উত্তর ও দক্ষিন পল্লীতে ২টি ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের নতুন ও পুরাতন তিনটি ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করে কমলগঞ্জ পৌরসভা, রহিমপুর ও ইসলামপুর ও আদমপুরের ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৩ শত পরিবার পানি বন্দি রয়েছেন। প্রশাসন থেকে বন্যার্থদের জন্য ২শত প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২ মে্িট্রক টন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কয়েকটি ঝুকিপুর্ণ স্থানে ভাঙ্গনের আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
কমলগঞ্জ উপজেলা ধলাই নদীর বিপদ সীমা অতিক্রম করে শুক্রবার রাত দুইটায় কমলগঞ্জ পৌরসভার রামপাশা গ্রামের শ্যামল পাল চৌধুরীর বাড়িসংলগ্ন এলাকার প্রায় ১০০ ফুট পরিমাণ প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙ্গন দেখা দেয়। ভাঙ্গনে রামপাশা ও কুমড়াকাঁপন আংশিক প্লাবিত হয়। অপর দিকে আদমপুর ইউনিয়নে নাতাজকোন, ইসলামপুর ইউনিয়নের মুখাবলি ও রহিমপুর ইউনিয়নের জগ¦নাথপুর নামক স্থানে ধলাই নদীর পুরাতন তিনটি ভাঙ্গন উন্মুক্ত থাকায় পানি প্রবেশ করে ঘোরামারা, তিলকপুর, নাজাত ঘোনা, জগনাথপুর, প্রতাবী, কান্দিগাও গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। শনিবার দুপুরে নদীর পানি কম থাকায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও সারা দিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধলাই নদীর পানি বেড়ে রবিবার ভোর কমলগঞ্জের বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে। রবিবার দুপুরে আদপুর ইউনিয়নের হকতিয়ারখলা উত্তর ও দক্ষিণ পল্লীতে আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা ও কোনাগাঁও এর পুরাতন ভাঙ্গা প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ইউনিয়নের ঘোড়ামারা এবং এই বাঁধের পানিতে আলীনগর ইউনিয়নের রানীরবাজার, যোগিবিল, লাংলিয়া, কামুদপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে । বন্যার পানিতে ১০০ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জের বন্যার স্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখতে আসেন মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ। রামপাশা গ্রাম পরির্দশন করেন এবং বর্ন্যাতের মাঝে ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেন। উপজেলা প্রশাসন পক্ষ হতে কমলগঞ্জে পৌরসভার ১শত পরিবার, ইসলামপুর ইউনিয়নে ২০টি ও রহিমুপর ইউনিয়নে ৮০টি পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ২শত প্যাকেট শুকনা খাবার ও ২ মে্িট্রক টন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ মো: আব্দুস শহীদও বন্যা কবলিত এলাকা পরির্দশন করেন। প্রশাসনের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।
কমলগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা মো: আনিসুরজামান জানান, প্রাথমিকভাবে বন্যার পানিতে কমলগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫০ হেক্টর কৃষিজমি পানিতে নিমজ্জিত আছে বলে জানা যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, রবিবার বিকাল ৫ টা ২০ মিনিটে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৯ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।