কুকুরের কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত বিপন্ন ‘লজ্জাবতী বানর’

কুকুড়ের কামড়ে বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানর ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কুকুরের কামড়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় বানরটিকে উদ্ধার করে বাংলাদেশ বন্যপ্রানী সেবা ফাউন্ডেশন। শুক্রবার সকালে শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের ষাটটুলা বস্তি থেকে উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ বন্যপ্রানী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বলেন, লজ্জাবতী বানরটি কুকুরের আক্রমনের শিকার হয়। কুকুর এই প্রাণীটির সারা শরীরে কামড়িয়ে আহত করে। স্থানীয় লোকজন খবর দিলে আমরা প্রাণীটিকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
তিনি জানান, পুরো শরীরে ক্ষত তৈরী হয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি প্রাণীটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য। প্রাণীটি বন ছেড়ে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে আসলে একটি কুকুরের দল বানরটিকে আক্রমন করে। দেশে বর্তমানে লজ্জাবতী বানর মহাবিপন্ন প্রজাতির প্রাণী বলে সজল জানান।
জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাণিজগতের বেশিরভাগ প্রাণি আজ বিরল বা বিপন্ন প্রজাতিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। আর দিনে দিনে যত বেগে প্রাণি কমছে তত বেগেই প্রকৃতি হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য। প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হলে তা মানব সমাজের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। বৈচিত্যময় সুন্দর প্রাণী জগতের অন্যতম সুন্দর। এ প্রাণিদের একটি হচ্ছে লজ্জাবতী বানর। লজ্জাবতী বানর বনের ঝোপঝাড়ে তেমন একটা নামে না। এরা লম্বা গাছের মগডালে থাকে।
গবেষকরা জানান, লজ্জাবতী বানর নিশাচর প্রাণী। বছরে একবার একটি করে বাচ্চা দেয়। তাদের ইংরেজি নাম ঝষড়ি ষড়ৎরং এবং বৈজ্ঞানিক নাম ঘুপঃরপবনঁং পড়ঁপধহম। গহিন সবুজ বনের ভিতরে লম্বা গাছের মগডাল থেকে গাছের কচিপাতা, গাছের আঠা, কষ, ছোট ছোট পোকামাকড়, ছোট পাখি এবং বিভিন্ন প্রাণিদের ডিম সাধারণত তারা খাদ্যে হিসেবে গ্রহণ করে। তবে অন্য বানরের মত তারা হাত দিয়ে খায় না, পাখির মত সরাসরি মুখ লাগিয়ে খায়। এরা খুব শান্ত স্বভাবের। অন্যান্য বন্যপ্রাণির চেয়ে তারা বেশ ধীরে চলে। বিশেষ প্রয়োজন না হলে দিনে এরা চলাচল করে না। অন্য প্রজাতির বানরের ছেয়ে এদের লেজ খুবই ছোট। সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয় যা দুর থেকে চোখে পড়ে না তেমন একটা। এরা সাধারণত একটা করে বাচ্চা দেয়।