বরমচালের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হাইকোর্টের রুল জারি
নিজস্ব প্রতিবেদক::
সিলেট-ঢাকা রেল লাইনের কুলাউড়ার বরমচালের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হাইকোর্ট রুল নিশি জারি করেছেন। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও বরমচালের বাসিন্দা ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমদ জনস্বার্থে রীট পিটিশনটি দাখিল করলে গত ১৯ আগস্ট রীট পিটিশনের উপর ৪র্থ দিনের মত শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমদ এবং এডভোকেট তাজুল ইসলাম অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও বরমচালের বাসিন্দা ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিচারপতি ময়নুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি আশফাকুল কামালের বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানীর পর এ বিষয়ের উপর রুলনিশি জারি করেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে স্বাক্ষরিত রুলে বাংলাদেশ রেলওয়ের সচিব, ঢাকা-সিলেট রেলওয়ে (রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল) এর ডাইরেক্টর জেনারেল, জেনারেল ম্যানেজার, পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রধান এবং ঢাকা-সিলেট (রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল) এর প্রধান প্রকৌশলীকে প্রতিপক্ষ করে রুল জারি করা হয়।
হাইকোর্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে (ঢাকা-সিলেট) রেল লাইনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেন অতিদ্রুত ঢাকা-সিলেট রেল লাইন মেরামত করা হবে না এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, ঢাকা-সিলেট রেল লাইনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের অধীনে কর্মরত কীম্যান, ওয়েম্যান, গ্যাংম্যান, ম্যাট, পার্মানেন্ট ওয়ে ইন্সপেক্টরদের কর্মতৎপরতা কেন সুনিশ্চিত করা হবে না এবং একই সাথে গত ২৩ জুন সংঘটিত দুর্ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত বরমচাল রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন বড়ছড়া ব্রীজের মেরামত সংক্রান্ত কি কি অগ্রগতি হয়েছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট আগামী ২৪ অক্টোবরের মধ্যে হাইকোর্টকে অবহিত করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন বরমচালের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ঢাকা-সিলেট অঞ্চলে চরম অব্যবস্থাপনা গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ঢাকা-সিলেট রেললাইনে ১৮টি ব্রীজ-কালভার্ট (শায়েস্তাগঞ্জ, শমসেরনগর, মনু, বরমচাল, মাইজগাঁও, ভাটেরা, ফেঞ্চুগঞ্জ এবং মোগলাবাজারসহ) বর্তমানে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ২৩ জুনের দুর্ঘটনার পর দফায় দফায় ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া লাইনে ত্রুটি সহ রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের চরম অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। রেলওয়ের নীতি নির্ধারকরা কর্মতৎপর হলেও মাঠ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার যথেষ্ট ঘাটতি, কর্তব্য কর্মে অবহেলা রয়েছে মর্মে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।