বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আজিজুর রহমানের স্বাধীনতার পুরুষ্কার গ্রহণ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন।
মকিস মনসুর.
আজ ২৯ শে অক্টোবর বৃহস্পতিবার বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারটায় মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের স্বাধীনতার পুরুষ্কার গ্রহণ করেন উনার ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন। এখানে উল্লেখ্য যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান জেলার গুজারাই গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত আজিজুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সরাসরি নির্দেশনায় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কারাবরণ করেন তিনি। এরপর একই বছরের ৭ এপ্রিল মুক্তিবাহিনী কর্তৃক জেল ভেঙ্গে সিলেট কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করা হয়। ২ মে পুনরায় পাকবাহিনী মৌলভীবাজার শহরে প্রবেশ করে বর্বরোচিত দমন পীড়ন চালানোর পর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন। এক পর্যায়ে মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আহুত পশ্চিমবঙ্গের বাগডুগায় (দার্জিলিং) প্রথম পার্লামেন্ট অধিবেশনে যোগদান করেন। প্রবাসী সরকারকর্তৃক আয়োজিত সামরিক প্রশিক্ষণে সিলেট বিভাগের একমাত্র প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য হিসেবে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ৪ নম্বর সেক্টরের রাজনৈতিক কো-অর্ডিনেটর ও কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং গণপরিষদ সদস্য হিসেবে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর শমসেরনগর, ৬ ডিসেম্বর রাজনগর এবং ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মৌলভীবাজারকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন তিনি।
গণপরিষদের এই সদস্য স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য রচিত সংবিধানের একজন স্বাক্ষরকারী। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় সংবিধানের একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনীতে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মৌলভীবাজার জেলা শাখার দুই বারের সাধারণ সম্পাদক ও দুই বার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পরবর্তীতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য আজিজুর রহমান।