বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মৌলভীবাজার রাজনগরের সাবেক এমপি তোয়াবুর রহিম চলে গেছেন না ফেরার দেশে

..মকিস মনসুর.
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মৌলভীবাজার জেলার প্রবীনতম রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ সংবিধানে স্বাক্ষর দানকারী,বরেন্য সমাজসেবক
,শিক্ষানুরাগী বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের (সিলেট ১৪ মৌলভীবাজার-রাজনগর-কমলগঞ্জ একাংশ) আসনের সাবেক গনপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব তোয়াবুর রহিম গত ৩১শে ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
রাত ৮টা ৩০ মিনিটে লন্ডনের চেরিংক্রস হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহির রাজিউন)।তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্য জনিত নানা জঠিল রোগে ভোগছিলেন l মৃত্যুকালে উনার বয়স হয়েছিল ৯২বছর।
তিনি স্ত্রী, সহ ৬ ছেলে, ১ মেয়ে নাতি নাতনি,আত্মীয়স্বজন
সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। নতুন বছরের হলিডে থাকায় জানাজার নামাজ দু’ তিন দিন পর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উনাকে লন্ডনে দাফন করা হবে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। দীর্ঘদেহী বর্ণাঢ্য এই রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবকের মৃত্যুতে দেশ বিদেশের বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছেl
এখানে উল্লেখ্য যে আলহাজ্ব তোয়াবুর রহিম তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে রাজনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন l পরবর্তীতে তিনি পূর্ব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও তৎকালীন গণ পরিষদের সদস্য এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।ব্রিটেনের পশ্চিম লন্ডনের ইলিং এর বাসিন্দা মরহুম তোয়াবুর রহিমের বাবা হাজী সালামত মিয়া যার হাত ধরে বিলেতে বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট ব্যবসার প্রসার ঘটেছিলোl তিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ক্যাটারিং এসোসিয়েশন বিসিএ’র নেতৃত্ব দেন।তার বাবা হাজী সালামত মিয়া তৎকালীন সময়ে সকলের কাছে বিগ বস হিসেবে পরিচিত ছিলেন।মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বালিসহস্র গ্রামে তোয়াবুর রহিমের জন্ম।বিশিষ্ট এই রাজনৈতিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত ঘনিস্টজন ছিলেন।ইতিপূর্বে পূর্বপাকিস্তান আমলে তিনি কাউন্সিল মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় প্রবাস থেকে দেশে ফিরে গিয়ে কাউন্সিল মুসলিমলীগ পরিত্যাগ করে পূর্বপাকিস্তান আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন।অবসর জীবনে তিনি নিজ এলাকায় তার প্রতিষ্ঠিত স্কুল পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সাথে জড়িত ছিলেন।তিনি নিজ এলাকার রাস্তা ঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে অনবদ্ধ অবদান রেখেছেন।তিনি তার বাবার নামে হাজী সালামত স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়,প্রাইমারী স্কুল সহ স্থানীয় সালামতগঞ্জ বাজার যা পুরো জেলায় (এমপির বাজার)নামে সুপরিচিত সেই বাজারের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা।বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে তিনি আর রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন নি।এরপর তিনি লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন,নিভৃতচারী জীবন বেঁচে নেন। ১৯৯৫ সালে আবার দেশে পাড়ি জমান এবং ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামীলীগের পক্ষে তিনি আবার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন l তিনি এলাকার শিক্ষাবিস্তারে নিরবিচ্ছিন্নভাবে আমৃত্যু অবদান রেখে গেছেন।
**************************************
সংবাদদাতা; মোহাম্মদ মকিস মনসুর
কচুয়া হাউস কাডিফ ওয়েলস ইন ইউকে.
Mokis Monsur @yahoo.co.uk
Mob :- 07984012425