যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের মুজিব অবিনশ্বর: ১৫ই আগস্ট বাঙালির ঘুরে দাঁড়াবার শপথের দিন’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত,..।
..মকিস মনসুর,
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ইতিহাসের মহানায়ক বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল ১৫ ই আগষ্ট যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উদ্যোগে জুমের মাধ্যমে মুজিব অবিনশ্বর: ১৫ই আগস্ট বাঙালির ঘুরে দাঁড়াবার শপথের দিন’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, এর সভাপতিত্বে এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, এর উপস্থাপনায় উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার, ও মানণীয় কৃষিমন্ত্রী ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক জননেতা আব্দুর রহমান, মানণীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন সহ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ ও বক্তব্য রাখেন। ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সকল শহীদানদের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া কামনা ও সবাইকে যেনো জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন; এই আশাবাদ ব্যাক্ত করা হয়েছে।
মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাত বার্ষিকী জাতীয় শোক দিবসে শোকার্ত হৃদয়ের স্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার, ও মানণীয় কৃষিমন্ত্রী ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক এমপি,বলেন
পাকিস্তানের দালাল ঘাতকেরা সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল ১৫ আগস্ট। ওরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধ্বংস করার জন্যে। ওরা জনবিচ্ছিন্ন ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপরই তারা যেসব কর্মসূচী, যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল তাতেই স্পষ্ট হয়েছিল তারা পাকিস্তানের ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারা গণমূখী ছিল না।’
তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা। অতীতের সেই সিরাজের বাংলায় শাসকেরা বাংলায় কথা বলতেন না, সেই বাংলার শাসকেরা উর্দু ফার্সিতে কথা বলতেন। বঙ্গবন্ধুই দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষকে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে একটি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানের বর্বরোচিত কাজের চিত্র লন্ডনের জনসমাগমস্থলে এখনও তুলে ধরতে পারি। বিদেশী গণমাধ্যমে আমরা কিছু খরচ দিয়ে হলেও এসব আনা দরকার। আমি শ্রদ্ধেয় সুলতান মাহমুদ শরীফ ভাইকে অনুরোধ করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি অবগত করবো। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ বলে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী আর ও আমরা ক্ষুধার্ত ছিলাম। আমরা দেশে দেশে ভিক্ষা করতাম। এখন ভিক্ষা করা লাগে না। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের কৃষিতে সাফল্য এসেছে। আমরা বাংলাদেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির দেশ হিসাবে গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ।
বিশেষ অতিথি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আব্দুর রহমান বলেন, আজকের এ দিনে বহু আন্দোলনে মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের বন্ধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৫ আগস্ট এলে আমরা নিথর হয়ে পড়ি, আমাদের মনে হয় আমরা সব হারিয়েছি। তিনি বলেন, ঘাতকরা জানতো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলে এই দেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করা যাবে। আমাদের মানচিত্র মুছে ফেলা সম্ভব হবে। তাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজ শোকের দিন কেবল আমাদের জন্য নয়, এ শোক বিশ্বের বিবেকবান মানুষের শোকের দিন। তিনি বলেন, সহস্র বছর পরেও বাংলাদেশ থাকলে এ শোকের দিন ফিরে আসবে। আজ আমরা সবাই সংযুক্ত হয়েছি শোককে শক্তিতে পরিণত করতে। আজ আমাদের শপথের দিন, ঘুরে দাঁড়াবার দিন। তিনি বলেন, পৃথিবীর বহু বড় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা যদি জুলিয়াস সিজার থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত সব হত্যাকান্ড দেখি, যে নির্মমতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে ছিল, সেরকম দ্বিতীয়টি আর নেই। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু সেই গ্রিক মিথলজির ফিনিক্স পাখি, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন ৭৫ এর ১৫ ই আগস্টের হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র একজন রাষ্ট্র প্রধানকে হত্যা বা কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ছিল না, এটা ছিল সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে হত্যা করার একটি ষড়যন্ত্র। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পর মানণীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিগত সরকারের আমলে হত্যাকাণ্ডের বিচার করার মাধ্যমেবঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল সেই হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করালেও হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়কদের বিচার করা হয়নি। জাতিকে পুরাপুরি কলঙ্কমুক্ত করতে হলে এই ষড়যন্ত্রকারীদের নেপথ্য নায়কদের মুখোশ উন্মোচন করা সবচেয়ে জরুরি।’
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ’৭৫ সালে আমরা সরকারে ছিলাম। তখন প্রশাসন ছিল, সেনাবাহিনী ছিল, কিন্তু ১৫ আগস্ট কী দেখলাম, তারা যে কারণেই হোক খুনীদের সহযোগী হয়ে গিয়েছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করে নি। তারা গণতন্ত্র সমাজন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতার দর্শন ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে গিয়েছিল। তাদের অপরাধের শাস্তি বিধান করা উচিত। তিনি বলেন, সেরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয় সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল এ আলোচনা সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এদিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঐদিন বাদ মাগরিব ব্রিকলেন জামে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে সকল শহীদানদের মাগফেরাত কামনা করা হয়েছে।।