সেদিন ওরাও এসেছিল।

সেদিন ওরাও এসেছিল !!!
(বঙ্গবন্ধু’র স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের কবিতা)
*মকবুল তালুকদার
সেদিন ওরাও এসেছিল কুর্মিটোলায়
জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে।
এসেছিলেন সখিনা খালা, মাইমুনা বুজি
রিক্তা, বাসন্তি,শুক্কুর,বছির আর তাপশী।
এসেছিল পাকিদের বাংকার থেকে মুক্ত অপরুপা, স্নিগ্ধা, মালতী আর ছন্দা!
ক্ষত বিক্ষত ধর্ষিতা বিরংগনা
যাদেরকে চেয়ারম্যান তুলে দিয়েছিল
পাকি হায়েনা পশুদের হাতে।
ওরা সবাই মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো!
সমাজে ওদের ঠাই নাই, গর্ভে যুদ্ধ শিশু!
ওরা কোন ক্ষতি পুরন চাইতে আসে নাই!
এসেছিল শুধু পিতা মুজিবকে দেখতে!
যার ডাকে এসেছে রক্তস্নাত স্বাধীন বাংলাদেশ।
মসজিদের ইমাম ছমির মুন্সীও এসেছিল!
মৈইত্যা রাজাকার তাঁকে ঘরে বন্দি করে
আগুন দিয়েছিল জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়ে
তাঁর সারা শরীর আগুনে ঝলসানো!
গায়ে পোড়া মাটির গন্ধ! তিনি এসেছিলেন
পিতা মুজিবের চোঁখের জলে শিক্ত হতে।
এসেছিল ঠান্ডু মিন্টু কবিতা আর রাহেলা
ওরা সবাই স্বজন হারানে! ওরা ছিন্নমুল!
রাজাকার’রা ওদের বাড়ীঘর পুড়িয়ে ছাই করেছে!
লাল সবুজের পতাকা আর বঙ্গবন্ধু’র স্বদেশ প্রত্যাবর্তন তাদের সান্তনা ও প্রেরনা!
সখিনা খালার সাথে নাতি মনুও এসেছিল!
ওর ইচ্ছা শেখ মুজিবকে দেখা, যার নাম নিতেই
পাকি’রা ওর দাদা আর পিতাকে হত্যা করেছে!
দেখতে এসেছিল দাদীর সাথে শেখ মুজিবকে।
নিরাপত্তার কারনে কাছে যেতে পারেনি ওরা!
তাতে দু:খ নেই ওদের! জনসমুদ্রে অবলোকন করছে জাতির পিতা শেখ মুজিকে!
দু’হাত তুলে কামনা করেছে তাঁর দীর্ঘ জীবন।
এসেছিল যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সামশু পাহাড়ীরা
তারা এসেছিল ক্ষতিপুরনের দাবী নিয়ে নয়?
এসেছিল বলতে! পংগুত্বে দু:খ নেই তাদের
পিতা মুজিব ফিরেছেন স্বাধীন বাংলায়।
দলে দলে মুক্তিযোদ্ধারা এসেছিল কুর্মিটোলায়
অভিবাদন জানিয়ে পিতাকে আশ্বস্ত করতে
“থাকবো মোরা সদাজাগ্রত তোমার পাশে”।
সেদিন কিন্তু জিয়া মুস্তাক তাহের ঠাকুর
ওবায়দুর মাহবুব চাষীরাও এসেছিল
কপালে দু:চিন্তার ভাঁজ! শীতের মধ্যেও ঘার্মাক্ত!
তারা এসেছিল ভিন্ন কারনে, এসেছিল দেখতে?
সত্যিই কি পাকি’রা মুক্তি দিয়েছে মুজিবকে?
এসেছিল পাকি কারখানায় তৈরী আমলারাও
তাঁদের আগমন আনুগত্য নয়? স্তাবকতা!
এসেছিল মুক্তিযুদ্ধের ১৬তম বাহিনীর সদস্য’রা
আরো এসেছিল উপযুক্ত বয়স হওয়া সত্বেও
নেতার নির্দেশ উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধে না যাওয়া
সুবিধাবাদী! তথাকথিত মুজিব সৈনিক’রা!
*লেখক: বীরমুক্তিযোদ্ধা ও কৃষিবিদ
স্নিউইয়র্ক, আমেরিকা।