টুঙ্গী পাড়ার খোকা বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিব।

*মকবুল তালুকদার
আফ্রো-এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকা তথা বিশ্বের শোষিত বন্ছিত মেহনতি মানুষের বিপ্লবী কন্ঠস্বর বিশ্ব বন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্হপতি বাঙালি জাতির ইতিহাসের মহানায়ক জাতিক জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালে গোপালগন্জ জেলার টুঙ্গী পাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতার নাম মোসাম্মৎ সাহারা খাতুন। তাঁদের চার কন্যা ও দুই পুত্রের মধ্যে তৃতীয় সন্তান শেখ মুজিব। বাবা-মা আদর করে শেখ মুজিবকে খোকা বলে ডাকতেন।খোকার জন্মের সময় হয়তো চন্দ্র সূর্য তাদের আলোক বর্তিকা ছড়িয়ে সৃষ্টিকর্তার দূত হিসাবে মর্তে নেমে এসে কপালে চুমু দিয়ে আর্শীবাদ করে বলেছিল “খোকা তোকে মানুষের অধিকার আদায়ে বজ্রকন্ঠের শিংহ পুরুষ হিসাবে আভির্ভূত হতে হবে”। অন্যদিকে বাতাসে সওয়ার হয়ে হিমালয় এসে বলেছিলো “ মানব কল্যানে “আমার চাইতেও অধিক উচ্চতায় তোকে দেখতে চাই”।তাইতো প্রকৃতির আর্শীবাদ ও হিমালয়ের সহচার্যে বাল্যকাল থেকেই শেখ মুজিব লোভ লালসার উর্ধে থেকে শোষিত-বন্চিত মানুষের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত রেখে হয়ে উঠেছিলেন রাজনীতির মহাকবি বজ্র কন্ঠের মহানায়ক বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
ইতিহাসবিদগন জানান, ১৯৩৯ সালে মাএ ১৯ বছর বয়সে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শের-এ – বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল পরিদর্শনে এলে শেখ মুজিব স্কুলের ছাত্রাবাস মেরামতের দাবী তুলে ধরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নজর আসেন এবং তখন থেকেই শেখ লুৎফর রহমানের প্রিয় খোকা রাজনৈতিক সচেতন শেখ মুজিব হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন।একই ভাবে ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া ও তাদের ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানানোর অপরাধে অযৌক্তিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হয়েও তিনি দমে যাননি।বরন্চ মানবতার কল্যানে শোষিতের পক্ষে অবস্হান নিয়ে নিজেকে হিমালয় সম উচ্চতায় নিয়ে যান।
১৯৪৭ সালে পাকিস্হান প্রতিষ্ঠার অব্যহতি পর জিন্নাহ’র “Urdu and urdu shall be the state languge of Pakistan” ভাষনে পর বাঙালি জাতির ক্রান্তি লগ্নে এবং মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে “মানি না, মানবো না” প্রতিবাদের মাধ্যমে বীরদর্পে বজ্রকন্ঠের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির নির্ভরযোগ্য নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন।এই পর্যায়ে তিনি জাতীয় রাজনীতির চালিকা শক্তি হিসাবে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারী ছাএলীগ প্রতিষ্ঠা করে ছাএলীগের মাধ্যমে পশ্চিমা শোষকদেরকে দাঁত ভাঙা জবাব দেয়ার উদ্দ্যেশে জেলের অভ্যন্তরে থেকেই মাতৃ ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।দ্বিতীয়ত: জিন্নাহ’র ভাষনের পরপরই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন অদ্ভূত মানচিএের পাকিস্হান বাঙালিদের জন্য নয়। তাই তিনি তাঁর সাংগঠনিক তৎপরতায় ১৯৪৯ সালে ঢাকার টিকাটুলীর রোজ গার্ডেনে পুর্ব পাকিস্হান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে আজকের আওয়ামী লীগ দলটির জন্ম গ্রহনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগকে পরিমার্জন করে তিনি (শেখ মুজিব) দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। অতপর পুর্ব বাংলার বাঙলিদেরকে সংগঠিত করে শেখ মুজিবের সাংগঠনিক তৎপড়তায় ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্টের ব্যানারে নিরংকুশ বিজয় অর্জিত হয়।কিন্তু পশ্চিমা শাষকগোষ্ঠী মার্শাল ল” জারী করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসতে না দিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ১১ অক্টোবর শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হয় এবং একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়। এই ভাবে পশ্চিম পাকিস্হান পুর্ব বাংলার জনগনকে ১০ বছর গোলাম বানিয়ে রেখেছিল।
অতপর ১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি শেখ মুজিবের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। এই সভায় মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলসমূহের জাতীয় সম্মেলনে শেখ মুজিব পুর্ব বাংলার স্বায়ত্ব শাসনের ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি পেশ করেন। প্রস্তাবিত ৬ দফা দাবী/প্রস্তাবটি বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ হিসাবে পরিচিত। ঐ বছরের ১ মার্চ শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েই ৬ দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সারা বাংলায় গণসংযোগ সফর শুরু করেন। এ সময় তাঁকে সিলেটে, ময়মনসিংহ ও ঢাকায় বার বার গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ্য, শেখ মুজিব ঐ বছরের প্রথম তিন মাসে আট বার গ্রেফতার হন এবং ৮ মে নারায়ণগঞ্জে পাটকল শ্রমিকদের জনসভায় বক্তৃতা শেষে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।
১৯৬৮ সনের ৩ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবকে এক নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জন বাঙালি সেনা ও সি এস পি অফিসারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। ১৭ জানুয়ারি শেখ মুজিবকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে পুনরায় জেল গেট থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে আটক রাখা হয়। ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের বিচার কার্য শুরু হয়।অপর দিকে ১৯৬৯ সনের ৫ জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু করে। পরে ১৪৪ ধারা অমান্য, কার্ফু ভঙ্গ, পুলিশ-ইপিআর-এর গুলিবর্ষণ, বহু হতাহতের পর এই আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নিলে স্বৈরাচার আইয়ুব ১ ফেব্রুয়ারি গোলটেবিল বৈঠকের আহ্বান জানায় এবং শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তিদানের কথা ঘোষণা দেয়। কিন্তু শেখ মুজিব প্যারোলে মুক্তিদান প্রত্যাখ্যান করলে ২২ ফেব্রুয়ারি জনগণের অব্যাহত চাপে সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবসহ অন্যান্য আসামিকে মুক্তি দানে বাধ্য হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে শেখ মুজিবের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। প্রায় ১০ লাখ ছাত্র জনতার এই সংবর্ধনা সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানের ভাষণে ছাত্র সমাজের ১১ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। ১০ মার্চ বঙ্গবন্ধু রাওয়ালপিন্ডিতে আইয়ুব খানের গোলটেবিল বৈঠকে যোগদান করেন। বঙ্গবন্ধু গোলটেবিল বৈঠকে আওয়ামী লীগের ৬ দফা ও ছাত্র সমাজের ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করে বলেন, ‘গণ-অসন্তোষ নিরসনে ৬ দফা ও ১১ দফার ভিত্তিতে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রদান ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।’ পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ও রাজনীতিবিদরা বঙ্গবন্ধুর দাবি অগ্রাহ্য করলে ১৩ মার্চ তিনি গোলটেবিল বৈঠক ত্যাগ করে ১৪ মার্চ ঢাকায় ফিরে আসেন। ২৫ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়। ইয়াহিয়ার সামরিক শাসনের মধ্যেও আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দাবী আদায়ের দৃঢ প্রত্যয় ঘোষনা করে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্ব শাসন ও সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবী পুন:ব্যক্ত করেন। ১৯৭০ সালে সামরিক জান্তা ইয়হিয়া সাধারন নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করলে মওলানা ভাষানী ও অন্যান্য বাম পন্থী দল নির্বাচনের বিরোধীতা সত্বেও বঙ্গববন্ধু নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং ৭ ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০টি আসনের মধ্যে ৩০৫টি আসন লাভ করে। উক্ত সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পুর্ব বাংলার একছএ নেতা হিসাবে বিশ্ববাসির নজরে আসেন।
১৯৭১ সনের ৩ জানুয়ারি রেসকোর্সের লক্ষ জনতার উপস্হিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জনপ্রতিনিধিদেরকে ৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনা এবং জনগণের প্রতি আনুগত্য থাকার শপথ গ্রহণ করান। কিন্তু পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা শুরু করলে ৭ মার্চ রেসকোর্সের জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ঐতিহাসিক ঐ ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে শৃঙ্খল মুক্তির আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা করেন, “রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ্”। একই সঙ্গে তিনি প্রত্যেকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে নির্দেশ প্রদান করেন। যা কিনা ছিল পুর্ব বাংলা বা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পুর্ব ঘোষনা। নির্বাচনোওর পশ্চিমা হায়েনাদের সকল ষড়যন্ত্র পর্যবেক্ষন করে পুর্ব বাংলার স্বাধীনতাকামী আপামর কৃষক শ্রমিক ছাএ জনতা মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহন করতে থাকে এবং গনতান্ত্রিক বিশ্ব পাকি জান্তা সরকারকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখে। এরই মধ্যে ১৬ মার্চ ঢাকায় ক্ষমতা হস্তান্তর প্রসঙ্গ মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক শুরু হয়। আলোচনার জন্য জনাব ভুট্টো ও ঢাকায় আসে। ২৪ মার্চ পর্যন্ত ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো আলোচনা হয়। ২৫ মার্চ আলোচনা ব্যর্থ হবার পর সন্ধ্যায় ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগ। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু ২৫শে মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনাটি নিন্মরূপ:
‘সম্ভবতঃ এটাই আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।আমি বাংলাদেশের জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছি তোমরা যে যেখানেই আছ এবং যাই তোমাদের হাতে আছে তার দ্বারাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দখলদার সৈন্যবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে হবে। যতক্ষণ না পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ ব্যক্তি বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত হবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে, তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে’।এই ঘোষণাটি বাংলাদেশের সর্বত্র ট্রান্সমিটারে প্রেরিত হয়।তিনি আরো উল্লেখ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমন করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে, আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোন আপোষ নাই। জয় আমাদের হবেই। পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রু কে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক প্রিয় লোকদের কাছে এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন। জয় বাংলা।
শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষনা বেতার যন্ত্র মারফত তাৎক্ষণিক-ভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় সারাদেশের সর্বএ পাঠানো হয়। রাতেই এই বার্তা পেয়ে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও যশোর সেনানিবাসে বাঙালি জওয়ান ও অফিসাররা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা প্রচার করা হয় গভীর রাতে। স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার অপরাধে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা রাত ১-১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে এবং ২৬ মার্চ তাঁকে বন্দি অবস্থায় পাকিস্তান নিয়ে যাওয়া হয়। ২৬শে মার্চ ইয়াহিয়া এক ভাষণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করে। একই দিন(২৬ মার্চ) চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন। ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে বিপ্লবী বাংলাদেশ সরকার গঠিত এবং ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে (মুজিবনগর) বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকি হায়েনা বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয় এবং বিশ্ব মানচিএে স্হান করে নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
অত:পর ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং স্হপতি। কাজেই পাকিস্তানের কোন অধিকার নেই তাঁকে বন্দি করে রাখার বা অবৈধ বিচারের নামে মৃত্যু দন্ড দেয়ার।বর্নিত অবস্হায় গনতান্ত্রিক বিশ্বের সরকার সমুহের প্রচন্ড চাপে পাকি জান্তা সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নি:শর্ত মুক্তি দানে বাধ্য হয়। ১০ জানুয়ারী’৭২ স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্হপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন এবং সাড়ে সাত কোটি বাঙালি তাঁকে জাতির পিতা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু বাঙালিদের নেতা বা বন্ধু ছিলেন না।আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তাঁর অবদান অপরিসীম ও তাৎপর্যপূর্ণ।বঙ্গবন্ধু বিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত ও শোষিত মানুষের নেতা ছিলেন।তিনি ছিলেন বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে একজন অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় নেতা।
১৯৭৩ সালে জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরই বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বিশ্বনেতা।প্রসংগত উল্লেখ্য, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানটি আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে পৌঁছালে সকল প্রটোকল ভেঙে তাঁকে রিসিভ করতে এগিয়ে আসেন সিংহ হৃদয়ের মানুষ জোসেফ ব্রোজ টিটো, যিনি মার্শাল টিটো নামে পরিচিত। বিমান থেকে নেমে আসতেই বঙ্গবন্ধুকে অশ্রূ সজল চোখে জডিয়ে ধরে তাঁকে সন্মান জানিয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, সিংহ হৃদয়ের পুরুষ মার্শাল টিটুকে কেউ কেউ কখনো কাঁদতে দেখে নাই। আলজিয়ার্স এ অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তৃতীয় বিশ্বের শোষিত মানুষের পক্ষে তাঁর সুদৃঢ অবস্হানের ঘোষনা দিয়ে বিশ্বনেতাদের নজর কাড়েন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই সম্মেলনে যোগদান এবং জোটনিরপক্ষ দেশের সার্বিক সমর্থনের বিষয়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা শুনে ফিদেল ক্যাস্ট্রো ছুটে এসে বঙ্গবন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘আই হ্যাভ নট সিন দ্য হিমালয়েজ, বাট আই হ্যাভ সিন শেখ মুজিব, ইন পারসোনালিটি অ্যান্ড ইন কারেজ, দিস ম্যান ইজ দ্য হিমালয়েজ। আই হ্যাভ দাজ হ্যাড দ্য এক্সপেরিয়েন্স অব উইটনেসিং দ্য হিমালয়েজ।’ সৌদি আরবের কিং ফয়সল, যিনি মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে এসে বারবার বলছিলেন, ‘আমি লজ্জিত, আমি লজ্জিত।’
সম্মেলন চলাকালীন আলজিয়ার্সের একটি বিখ্যাত মসজিদে মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সৌদি কিং ফয়সলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুও দলবেঁধে নামাজ পড়তে গেলে এক সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তো সেক্যুলার, তাহলে নামাজ পড়েন কেন?’ এর জবাবে বঙ্গবন্ধু দৃড়কন্ঠে বলেন, ‘ইন মাই পারসোনাল লাইফ, আই এম এ ট্রু মুসলিম। বাট ইন মাই পলিটিক্যাল লাইফ, আই এম সেক্যুলার। ’ বঙ্গবন্ধুর এ বক্তব্য মুসলিম বিশ্বে তাঁকে একজন সাচ্চা মুসলমান হিসাবে পরিচিত করে এবং মুসলিম বিশ্বের একজন সম্ভাব্য আগত নেতা হিসাবেও বিবেচনায় আসেন।
জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগদান করে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কারিশমাটিক কূটনৈতিক দর্শন, বিশ্বনেতাদের নজর কাড়তে সমর্থ হয়, যা পরে বাংলাদেশের বিশ্বস্বীকৃতি, জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ, বিশ্বশান্তি পদক ‘জুলিও কুরি’ অর্জন তাঁর ব্যক্তিত্বের নিদর্শনস্বরূপ। তাই বলা হয়, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পরই বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন বিশ্বনেতার মর্যাদা।
১৯৭৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিতব্য ইসলামী সহযোগিতা সংস্হা(ওআইসি)-এর মহাসচিবের কাছ থেকে সম্মেলনে যোগদানের পুন:অনুরোধ জানিয়ে একটি অনুরোধ বার্তা এসেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কাছে। একই সঙ্গে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ারি বুমেদিন তাঁর বিশেষ বিমান পাঠিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকে লাহোরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ওআইসি-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি প্রতিনিধিদলও ঢাকায় এসেছিল ২২ ফেব্রুয়ারি। উক্ত দলে আলজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুতেফলিকার নেতৃত্বে আরব বিশ্বের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগন এবং কুয়েতের আমিরের বিশেষ দূত হিসেবে কুয়েতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন বিশ্বনেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সম্মেলনস্হল লাহোরে স্কট করে নিয়ে যেতে। এতেই বুঝা যায় টঙ্গী পাড়ায় জন্ম নেয়া শেখ লুৎফর রহমানের প্রিয় খোকা মাএ ৫৫ বছর বয়সে তাঁর ত্যাগ ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে প্রথমে বঙ্গবন্ধু, পরে বাঙলির জাতির পিতা এবং সর্বশেষে বিশ্ববন্ধু বা বিশ্ব নেতা হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্হপতি শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথমবারের মতো বাংলায় ভাষণ দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। এই ভাষণটি ছিল বিশ্বের অধিকার বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং নিষ্পেষিত মানুষের ন্যায়সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠার ও বিশ্বশান্তির জন্য বলিষ্ঠ উচ্চারণ ও সাহসী পদক্ষেপ।অসীম সাহসী ও দৃঢ়চেতা বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণের বিরাট অংশজুড়ে একদিকে ফ্যাসিবাদী, সাম্রাজ্যবাদী এবং বর্ণবাদীদের প্রতি সাবধানতার কথা উচ্চারিত হয়েছিল; আবার অন্যদিকে শোষিত মানুষের অধিকার ও মুক্তির পক্ষে অবস্হানের ঘোষনা ছিল। তিনি বজ্রকন্ঠে এ কথাও বলেছিলেন, ‘আমি জীবনকে ভালোবাসি, তবে আমি মানুষের মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করতে ভয় পাই না’।
জাতিসংঘের মহাসচিব কুর্ট ওয়াল্ড হেইম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় আমি সন্তুষ্ট ও আনন্দিত। ঐতিহাসিক ঐ সম্মেলনে সমাগত রাষ্ট্র প্রধানগন, অতিথি বৃন্দ এবং জাতিসংঘের ডেলিগেট গন বঙ্গবন্ধুকে কিংবদন্তি নায়ক বলে আখ্যায়িত করেন। তাই গত ১৫ আগস্ট ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় শোক দিবসে জাতিসংঘের সদর দফতরে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানের আলোচকবৃন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বিশ্ববন্ধু (ফ্রেন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড)’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তবে দু:খ জনক যে, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন-পুনর্বাসন সম্পন্ন করে বঙ্গবন্ধু যে মুহূর্তে সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী ভিত রচনা ও এর সার্বিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করলেন, ঠিক তখনই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত দেশি-বিদেশী চক্রের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে সংঘটিত হয় বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ১৫ই আগস্টের ট্র্যাজেডি। নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে।
প্রসংগত উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। হত্যাকারীদের প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল ঘৃণার বিষবাষ্প। এর ধারাবাহিকতায় পশ্চিম জার্মানির নেতা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না”। তাঁর ভাষায়, “যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে, তারা যে কোন জঘন্য কাজ করতে পারে”।বঙ্গবন্ধুর নিহত হবার সংবাদ শুনে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ক্ষোভ, দুঃখ ও অশ্রু সজল কন্ঠ আক্ষেপ করে বলেছিলেন “বাঙালি’রা আমারই দেয়া ট্যাঙ্ক দিয়ে আমার বন্ধু মুজিবকে হত্যা করেছে! তাই আমি নিজেই নিজেকে অভিশাপ দিচ্ছি”।কিউবার প্রেসিডেন্ট বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেছিলেন, শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে, আর আমি হারালাম বিশাল হৃদয়ের একজন অকৃত্রিম বন্ধুকে”। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত কান্না জড়িত কন্ঠে বলেছিলেন, “কুসুম কোমল হৃদয়ের আপসহীন সংগ্রামী নেতা প্রিয় বন্ধু শেখ মুজিবকে হারিয়ে সত্যিই আমি ব্যথিত ও দু:খিত”।জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট কেনেথা কাউণ্ডা বলেছিলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভিয়েতনামী জনগণসহ বিশ্বের শোষিত মানুষের অনুপ্রেরনা”। বৃটিশ এমপি জেমসলামন্ড বলেছিলেন, “বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে শুধু বাঙালি জাতিই এতিম হয়নি, বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে”।জাপানি নাগরিক মুক্তি ফুকিউরা আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেছিলেন “এশিয়ায় শেখ মুজিবের মতো সিংহ পুরুষ এবং হৃদয়বান নেতা আর জন্ম গ্রহন করবেনা”।
তাইতো বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রখ্যাত রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন মনে করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দৈহিকভাবে হত্যা করা হলেও তাঁর মৃত্যু নেই। তিনি চিরঞ্জীব। তিনি একটি জাতিস্বত্বার স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্থপতি। তাই যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যত দিন থাকবে পদ্মা মেঘনা যমুনা, ততদিন বঙ্গবন্ধু অমর হয়ে থাকবেন সমগ্র বাঙালি জাতির হৃদয়ের মনি কোঠায়।
জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
*যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি বীর মুক্তিযোদ্ধা,কলামিষ্ট, কৃষিবিদ,গবেষক ও উপদেষ্টা, টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগ ।——————————————————