চুনারুঘাটে ভারতীয় মাদকসহ দুই কারবারি গ্রেফতার

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবির অভিযানে ১২০ কেজি গাঁজা, এক বোতল ভারতীয় মদ ও ৪ বোতল ভারতীয় বিয়ারক্যানসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ চিমটিবিল বিওপি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার ইনাতাবাদ এলাকার মৃত রমজান আলীর পুত্র তাইজুল ইসলাম (৬০), কালিশিরি এলাকার জাকির হোসেনের পুত্র মো: মানিক মিয়া (২৮)। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ ৫৫ বিজিবির চুনারুঘাট সীমান্তের চিমটিবিল বিওপির হাবিলদার জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন ।
মামলায় দায়ের পর চুনারুঘাট থানা পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন। বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে ৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে ভারত থেকে অবৈধ পথে চোরাকারবারিরা ভারতীয় মাদক নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এমন গোপন সংবাদ পেয়ে চুনারুঘাট থানাধীন ৪নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত মেইন পিলার ১৯৭৫/ ২৩ হতে ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যান্তরে চাকলা পুঞ্জি লেবু বাড়ি এলাকায় বিজিবির চিমটবিল বিওপির একদল লোক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে মাদক সহ গ্রেপ্তার করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রাশেদুল হক জানান, মাদক সহ বিজিবির মামলায় ওই দুই কারবারিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্ত দিয়ে মাদক আসা কমেছে, তবে মামলার সংখ্যা বেড়েছে। যখন যে সুযোগ পাচ্ছে সেই এ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।
পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে, নিয়মিত অভিযানে মাদকসহ কারবারি আটক করছি এবং মামলা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাঁজা, ইয়াবা-ফেনসিডিল ভারতীয় কারবারিদের কাছ থেকে বাংলাদেশি অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত ধরে পৌঁছে যায় চুনারুঘাট সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া যারা আগে গরুর ব্যবসা করতেন সীমান্তের সবকিছুই তাদের চেনা-জানা। মূলত তাদেরই একটি অংশ বাংলাদেশে মাদক নিয়ে আসার কাজটি করছেন। এসব মাদক ব্যবসায়ী রাতারাতি টাকার মালিক বনে গেছেন। এর প্রভাব পড়ছে স্থানীয় তরুণ সমাজেও। অল্প বয়সীরা কৌতূহলেরবশে এসব মাদক গ্রহণ করছে। এরপর ধীরে ধীরে তা পরিণত হচ্ছে নেশায়।
গোপন সুত্র জানায়, ভারত থেকে দিনে কিংবা রাতে সুযোগ বুঝে আনা হয় ইয়াবা, মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল,ও হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। তবে পরিবহনে সহজ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি আসছে গাঁজা ও ইয়াবা। আর মাদক পাচারে ব্যবহার করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকার গরিব-নিরীহ মানুষদের। মাদক বহনে ব্যবহার হচ্ছে নারী-পুরুষ, যুবক, কিশোর ও শিশুদের। আর মাদকের গডফাদাররা আড়ালে বসে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মাদকের টাকা অটোমেটিক্যালি গডফাদারদের কাছে চলে যায়। বড় বড় মাদকের ডিলাররা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ধরা পড়ে মূলত মাদক বহনকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। এতে করে মাদক প্রতিরোধে এক প্রকার হিমশিম খেতে হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীদের।